আইকোনিক ফোকাস ডেস্কঃ পবিত্র কোরআন মানবজাতির মুক্তির দিশা। মহান আল্লাহ এই মহাগ্রন্থকে মানবজাতির জন্য রহমতস্বরূপ প্রেরণ করেছেন। যারা কোরআন মোতাবেক চলবে; তার হক আদায় করবে, তারা মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করবে এবং সঠিক পথের দিশা পাবে। নিম্নে পবিত্র কোরআনের কয়েকটি দাবি তুলে ধরা হলো-
১। কোরআনের ওপর ঈমান আনা
কোরআনের সর্বপ্রথম দাবি হলো, কোরআনের ওপর ঈমান। কোনো ব্যক্তি যদি কোরআনের ওপর ঈমান না আনে, সে ঈমানদার হতে পারে না। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনরা, তোমরা ঈমান আনো আল্লাহর প্রতি, তাঁর রাসুলের প্রতি এবং ওই কিতাবের প্রতি, যা আল্লাহ তাঁর রাসুলের ওপর নাজিল করেছেন।
২। কোরআন বিশুদ্ধভাবে পড়া
পবিত্র কোরআনের অন্যতম দাবি হলো, তা শুদ্ধভাবে পড়া। শুদ্ধভাবে কোরআন না পড়লে নামাজ হয় না। তাই প্রতিটি মুমিনের উচিত, কোরআন বিশুদ্ধভাবে পড়তে সচেষ্ট হওয়া। আয়েশা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘কোরআন পাঠে দক্ষ ব্যক্তি (আখিরাতে) সম্মানিত নেককার লিপিকর ফেরেশতাদের সঙ্গে থাকবে। আর যে ব্যক্তি তা পাঠ করে এবং এটা তার পক্ষে খুবই কঠিন ও কষ্টকর, সে দুটি পুরস্কার পাবে।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২৯০৪)
অর্থাৎ বয়স কিংবা অন্য কোনো জড়তার কারণে যার কোরআন বিশুদ্ধভাবে পড়তে কষ্ট হয়, তার পরও সে বিশুদ্ধভাবে পড়ার চেষ্টা করে, সে দ্বিগুণ সওয়াব পাবে।
৩। কোরআনকে ভালোবাসা
পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘এবং যখন তারা রাসুলের প্রতি যা অবতীর্ণ করা হয়েছে তা শ্রবণ করে, তখন তারা যে সত্য উপলব্ধি করে তার জন্য তুমি তাদের চোখ অশ্রুবিগলিত দেখবে। তারা বলে, হে আমাদের প্রতিপালক, আমরা বিশ্বাস করেছি। অতএব তুমি আমাদের (সত্যের) সাক্ষীদের দলভুক্ত করো।
৪। কোরআনকে সম্মান করা
কোরআনের অন্যতম দাবি হলো কোরআনকে সম্মান করা, কোথাও কোরআন তিলাওয়াত হলে নিশ্চুপ হয়ে মনোযোগসহ তা শ্রবণ করা। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর যখন কোরআন পাঠ করা হয়, তখন তোমরা মনোযোগের সঙ্গে তা শোনো এবং নিশ্চুপ হয়ে থাকো, যাতে তোমাদের প্রতি দয়া করা হয়।
৫। কোরআনচর্চা অব্যাহত রাখা
কোরআন বিশুদ্ধভাবে শিখলেই দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না; বরং কোরআনের দাবি হলো, তার চর্চা অব্যাহত রাখতে হবে। নইলে তা ভুলে যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা আছে। ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি অন্তরে কোরআন গেঁথে (মুখস্থ) রাখে তার দৃষ্টান্ত হচ্ছে ওই মালিকের মতো, যে উট বেঁধে রাখে। যদি সে উট বেঁধে রাখে, তাহলে সে উট তার নিয়ন্ত্রণে থাকে; কিন্তু সে যদি বাঁধন খুলে দেয়, তাহলে তা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।
৬। কোরআন মোতাবেক আমল করা
সাহল ইবনে মুআজ আল-জুহানি (রহ.) তাঁর পিতা থেকে বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোরআন পাঠ করে এবং কোরআনের নির্দেশনা মোতাবেক আমল করে, কিয়ামতের দিন তার মা-বাবাকে এমন মুকুট পরানো হবে, যার আলো সূর্যের আলোর চেয়েও উজ্জ্বল হবে।
৭। কোরআন নিয়ে গবেষণা করা
পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তবে কি তারা কোরআন নিয়ে গভীর চিন্তা করে না? নাকি তাদের অন্তরে তালা আছে?’ (সুরা : মুহাম্মদ, আয়াত : ২৪) মহান আল্লাহ আমল করার তাওফিক দান করুন।