মাদারীপুরে বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা

শীতের তীব্রতা একটু একটু করে বৃদ্ধি পাচ্ছে। রাতে কমছে তাপমাত্রা। একই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যাও।  

মাদারীপুর জেলার হাসপাতালগুলোতে সর্দি-জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়াসহ নানান রোগী আক্রান্তরা চিকিৎসা নিতে আসছেন প্রতিদিন। দিন দিন রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। আক্রান্তদের মধ্যে বেশির ভাগই শিশু ও বয়স্করা।জেলার হাসপাতালগুলোতে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে রোগীর সংখ্যা বেশি। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহ ধরে মাদারীপুরে বেড়েছে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা। গ্রামগঞ্জ থেকে আসা শিশু-বৃদ্ধসহ নানান বয়সের মানুষ ভর্তি হচ্ছেন হাসপাতালে। সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত ঠান্ডা বাতাস এবং রাত বাড়ছে শীত। এতে জ্বর, সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া রোগ নিয়ে জেলার ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন রোগীরা। সবচেয়ে বেশি চাপ বেড়েছে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে। আসন সংকটে গাদাগাদি করে নিতে হচ্ছে স্বাস্থ্যসেবা। ঠান্ডাজনিত রোগের বাইরে কারও কারও দেখা দিয়েছে চর্ম রোগও। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বহির্বিভাগেও রোগীর চাপ। সেবা দিতে হিমশিম অবস্থা চিকিৎসক ও নার্সদের। এদিকে কাঙ্ক্ষিত সেবা না পেয়ে ক্ষুব্ধ রোগীরা। 

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গড়ে প্রতিদিন শুধুমাত্র জেলার ২৫০ শয্যা হাসপাতালে আন্তঃবিভাগ ও বহির্বিভাগে দেড় থেকে দুই হাজার মানুষ স্বাস্থ্যসেবা নিচ্ছেন। ১৬৪ জন জনবলের বিপরীতে রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা দিতে কাজ করছেন চিকিৎসক-নার্সসহ ১৩৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী। দীর্ঘদিন ধরে খালি পড়ে আছে ২৯টি পদ। এতে ব্যাহত হচ্ছে স্বাস্থ্যসেবা। 

রোগীরা জানান, হাসপাতালে রোগীর প্রচুর ভিড়। বেশির ভাগই ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত। শিশু ও বৃদ্ধ রোগীর সংখ্যা বেশি। ভিড় থাকায় সেবা পেতে দেরি হচ্ছে হাসপাতালে। 

হাসান নামে এক রোগী বলেন, রোগীর সংখ্যা বেশি থাকায় বেড খালি পাওয়া যাচ্ছে না। এক বেডে দুজন রোগীকে থাকতে হচ্ছে। রাতে ঘুম হয় না ঠিকমতো। মশার উপদ্রবতো আছেই। 

ঝাউদি ইউনিয়নের মোবারকদি গ্রামের কাশেম সরদারের স্ত্রী সাফিয়া বেগম বলেন, প্রথমে আমার জ্বর হয়েছিল। তারপর ডায়রিয়া হয়। পরে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। পাঁচদিনেও সমস্যা দূর হয়নি। 

জেলার শিবচর হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা রেক্সোনা বেগম বলেন, বাচ্চার ঠান্ডা-জ্বর। এজন্য ডাক্তারের কাছে এসেছি। হাসপাতালে রোগীর প্রচুর ভিড়। বাচ্চারা ঠান্ডায় বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। 

মো. আসলাম নামে এক ব্যক্তি বলেন, ৩-৪ দিন ধরে সর্দি-কাশি। সঙ্গে জ্বরও আছে। সাড়ে না। শনিবার হাসপাতালে এসেছি ডাক্তার দেখাতে। 

মাদারীপুরের সিভিল সার্জন ও ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মুনীর আহম্মেদ খান বলেন, আবহাওয়া পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা। রোগ প্রতিরোধে গরম পোশাকের ব্যবহার বাড়ানোর পাশাপাশি অপ্রয়োজনে বাইরে না বের হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া শিশু ও বৃদ্ধদের বিশেষ যত্ন নিতে হবে। তাহলে ঠান্ডাজনিত রোগ হওয়ার আশঙ্কা কমে যাবে।  

তিনি আরও বলেন, হাসপাতালের জনবল সংকট সমাধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।  

Leave a Reply

Translate »