দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল। রোববার (৫ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় নির্ধারিত সময় শুরু হয় ম্যাচ। কিন্তু মাত্র সাত মিনিটের মাথায় মাঠে প্রবেশ করেন অ্যানভিসার এক কর্তা।
এমন সময় সাইডলাইনের পাশে থাকা আর্জেন্টাইন তারকা নিকোলাস ওটামেন্ডির সঙ্গে হাতাহাতিও হয় ওই ব্যক্তির সঙ্গে। এরপর মুহূর্তেই পরিস্থিতি অস্বাভাবিক হয়ে ওঠে। ধারণা করা হচ্ছিল একাধিক খেলোয়াড়কে গ্রেফতারও করা হতে পারে। কিন্তু কেন। যদিও শেষ পর্যন্ত দেশটি ছেড়ে এসেছে আলবেসিলেস্তেরা।
এরপর দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে বাড়তি উত্তাপ সৃষ্টি হয়। তবে বল দখলের লড়াই নয়, মাঠে বিশৃঙ্খলার জন্য শিরোনামে ম্যাচটি। ম্যাচ শুরু হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই তা বন্ধ হয়।
কিছুক্ষণ পর ব্রাজিলিয়ান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ( অ্যানভিসা) কর্তারা ডাগ আউটে উপস্থিত হন। তাদের দাবি, সফরকারী দলটি কোয়ারেন্টিন বিধি ভঙ্গ করেছে। এতে মাঠ ত্যাগ করেন লিওনেল মেসিরা। ম্যাচটি স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা অপেক্ষা করার পর চার খেলোয়াড়ের গ্রেফতারের হুমকির মুখে দেশটি ছেড়ে যায় আর্জেন্টাইন খেলোয়াড়রা।
আর্জেন্টিনার হয়ে খেলা এমিলিয়ানো মার্টিনেজ, ক্রিশ্চিয়ান রোমেরো, গিওভানি লো সেলসো ও এমিলিয়ানো বুয়েন্দিয়া কোভিড বিধি না মেনেই মাঠে নেমেছেন। প্রিমিয়ার লিগ খেলে এই চারজন ইংল্যান্ড থেকে সরাসরি ব্রাজিলে পৌঁছান। তাদের প্রথম তিনজন ব্রাজিলের বিপক্ষে মূল একাদশে ছিলেন। কোভিড বিধি অনুযায়ী ইংল্যান্ড থেকে কেউ ব্রাজিলে প্রবেশ করলে অবশ্যই তাকে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। তাই তাদের একাদশ থেকে বাদ দিয়ে ম্যাচ চালানোর কথা বলে ব্রাজিলের স্বাস্থ্য অধিদফতর।
এদিকে দক্ষিণ আমেরিকান ফুটবল ফেডারেশনের (কনমেবল) সাধারণ সম্পাদক গঞ্জালো বেলোসো বলেছেন, ‘আমাদের ম্যাচগুলো বায়োবাবল তথা জৈব সুরক্ষা বলয়ে থেকে খেলানো হয়। ব্রাজিল ফুটবল ফেডারেশন (সিবিএফ) এর আয়োজক। তাদেরই ম্যাচগুলো শেষ করার দায়িত্ব ছিল।’
কনমেবলের পক্ষ থেকে বিবৃতিতে জানানো হয়, ম্যাচ রেফারির নেয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্রাজিল বনাম আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের ম্যাচটি স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ফিফা।
আর্জেন্টিনার ম্যানেজার লিওনেল স্কালোনি বলেন, ‘খেলা শুরুর পর মাঠে ঢুকে ফুটবলারদের খেলতে বাধা দেওয়াটা ঠিক হয়নি। ওই চার ফুটবলার খেলতে পারবেন না, সেটা আমাদের জানানো হয়নি। ম্যাচটা চলতে দেয়া উচিত ছিল।’
অন্যদিকে অ্যানভিসার দাবি, ম্যাচ শুরুর দুই ঘণ্টা আগে চার ফুটবলারের খোঁজে আর্জেন্টিনার টিম হোটেলে গিয়েছিলেন তাদের কর্তারা। যদিও তার আগেই সফরকারীরা স্টেডিয়ামের উদ্দেশ্যে হোটেল ছেড়ে যান। স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘিত হয়েছে। তাই মাঠে ঢুকতে বাধ্য হন তারা।
অবশ্য এই ঘটনায় ব্রাজিলিয়ান স্পোর্টস কমেন্টেটর গালভাও বুয়েনোর মন্তব্য, ‘পুরো দুনিয়ার সামনে আমরা লজ্জায় পড়লাম।’
অন্যদিকে দেশটির রাজনীতিক রদ্রিগো মাইয়া বলেছেন, ‘আশা করি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর প্রেসিডেন্টের অনুষ্ঠান গুলোতেও এমন স্বাস্থ্য বিধি নিশ্চিত করবে। যেখানে মাস্ক ও ভ্যাকসিন ছাড়া ব্যাপক লোকের সমাগম হয়।’