আইকোনিক ফোকাস ডেস্কঃ আসন্ন রমজানের ঈদকে সামনে রেখে পোশাক ও বস্ত্র শিল্পকে আর্থিক সংকট মোকাকিলা সহায়তা দিতে শ্রমিক ও কর্মচারীদের এপ্রিল, মে ও জুন তিন মাসের বেতন-ভাতা ও বোনাস দেওয়ার জন্য ঋণ সুবিধা চেয়েছেন তৈরি পোশাক সংশ্লিষ্ট বাণিজ্য সংগঠন বিজিএমইএ, বিটিএমএ এবং বিকেএমইএ।
এ লক্ষ্যে অর্থমন্ত্রীকে গতকাল শনিবার (২৪ এপ্রিল) একটি যৌথ চিঠি দিয়েছে সংগঠনগুলো।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, শ্রমিক-কর্মচারীদের গতবছরের এপ্রিল-মে-জুন-জুলাই ২০২০ মাসের বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য সহজ শর্তে ঋণ হিসেবে বিশেষ প্রণোদনা দেওয়ার ফলে এ শিল্পের অস্তিত্ব টিকে রয়েছে। সংকটপূর্ণ পরিস্থিতি মোকাবিলায় সক্ষমতা অর্জন করতে পেরেছে।
বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে পোশাক শিল্পে চরম বিপর্যয় নেমে এসেছে। এর প্রভাবে অনেক পোশাক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক অনেক ক্রেতা নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণা করায় তাদের কাছ থেকে রপ্তানি পণ্যের বিপরীতে পেমেন্ট পাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
ক্রেতার ক্রয়াদেশ বাতিল বা স্থগিত ও নির্দিষ্ট সময়ে পেমেন্ট না পাওয়ার ফলে পোশাক খাত আর্থিক সংকটের মধ্যে রয়েছে। বিশ্ব বাজারে রপ্তানি সক্ষমতা বজায় রাখার জন্য বাংলাদেশের পোশাক শিল্প অন্যান্য দেশের তুলনায় কম মূল্যে পোশাক রপ্তানি করে। যার মধ্যে মুনাফার অংশ খুবই কম থাকে। টিকে থাকার জন্য অধিকাংশ ক্ষেত্রে লস দিয়েও ক্রয়াদেশ নিতে বাধ্য হয় । শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন – ভাতা ও প্রতিষ্ঠান পরিচালনার ব্যয় পরিশোধ করা হতো ক্রেতার কাছ থেকে পেমেন্ট পাওয়া ও নগদ সহয়তা বাবদ প্রণোদনার অর্থ পাওয়ার পর ।
রপ্তানিমূল্য প্রত্যাবাসন না হওয়ার কারণে নগদ সহায়তার আবেদনও করতে পারছে না । আবার অনেক ক্রেতা ডিসকাউন্ট হারে মূল্য পরিশোধ করছে । যে কারণে প্রতিষ্ঠানগুলো তারল্য সংকট নিরসন করতে পারছে না । করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ধীরে ধীরে কমবে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক পর্যায়ে ফিরে আসবে, এটাই সবার কাম্য ছিল ।
কিন্তু বিশ্বব্যাপী পুনরায় শুরু হয়েছে করনারো দ্বিতীয় ঢেউ । বিশ্বের অনেক দেশেই আগের মতো লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে । যার ফলে যেসব ক্রেতা পেমেন্ট দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তারাও পেমেন্ট দিতে অপরাগতা প্রকাশ করছেন।
আসন্ন ঈদে সচল কারখানাগুলোর শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন- ভাতা ও বোনাস দেওয়ার জন্য রপ্তানিকারকদের ওপর প্রচণ্ড চাপ রয়েছে। উদ্যোক্তাদের আর্থিক সংকটের কারণে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা ও বোনাস পরিশোধের জন্য অর্থের জোগান দেওয়া কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে ।
এমন পরিস্থিতিতে রপ্তানিমুখী পোশাক শিল্পকে সহায়তা করার জন্য শ্রমিক-কর্মচারীদের এপ্রিল, মে ও জুন (২০২১) মাসের বেতন-ভাতা ও বোনাস দেওয়ার জন্য গত বছরের মতো সহজ শর্তে ঋণের দাবি জানিয়েছেন গার্মেন্টস মালিকরা।