আইকোনিক ফোকাস ডেস্কঃ বিপদগ্রস্ত ব্যক্তি বলতে পারে যে আসলে সে কত কষ্ট ক্লেশ এর মধ্যে জীবন যাপন করছে । হোক না সে শারীরিক বিপদে, আর্থিক বিপদে, অথবা মানসিক বিপদে রয়েছে ।যে কোন বিপদ মানুষের জীবনে বয়ে নিয়ে আসে মারাক্তক ক্লেশ ও কষ্ট । তাই আল্লাহর রাসূল (সাঃ) এর তিনটি উপদেশ আজ আমরা জানবো এগুলো আল্লাহর রাসূল (সাঃ), তাঁর উম্মতদেরকে বিপদ থেকে বাঁচতে এই তিনটি উপদেশ দিয়েছিলেন । ইসলামের দেখানো পথেই মুক্তি ।
জাগতিক মুক্তি । পরকালীন মুক্তি । রাসুল (সাঃ),এর ভবিষ্যৎ বাণী অনুযায়ী বর্তমান কাল টি চলছে ফেতনার । বৃস্টি ফোটার নয় ব্যাপকহারে ফেতনা দেখা দিচ্ছে ।মানুষের জানমাল কোন কিছুই এখন নিরাপদ নয় । রাসুল (সা), এর ভাষ্য অনুযায়ী তখন একজন মানুষ বিপদে পড়েও বুঝতে পারবে না কিসের জন্য তার এই বিপদ এসেছে ।
মানুষ মরবে কিন্তু হত্যাকারী ও নিহত ব্যক্তি কেউ জানবে না কিসের জন্য তাকে মারা হচ্ছে । এই জামানা নিজেকে রক্ষা করতে হলে ঈমানের দৃঢ়তা ও রাসুল (সাঃ), এর সুন্নাহের কোন বিকল্প নেই। আমরা অনেক কিছু থেকেই রক্ষা পেতে পারি নিম্নে বিষয়গুলি ওপর আমল করা দাঁড়া ,আসুন জেনে নেই ।বিপদ থেকে বাঁচতে রাসুল (সাঃ), এর তিনটি উপদেশ ।
রাসুল (সাঃ) একজন সাহাবী উকবা ইবনে আমের (রাঃ) একদিন রাসূল (সাঃ) এর সাক্ষাতে হলে, তিনি জিজ্ঞেস করলেন হে রাসূলুল্লাহ সাল্লাম বিপদ আপদ থেকে কিসের দ্বারা রক্ষা পেতে পারি ? তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাম বললেন তিনটি কাজ করলে বিপদ থেকে হেফাজত থাকতে পারবে ।ওই তিন কাজ হচ্ছে , এক অপ্রয়োজনীয়’ কথা থেকে নিজেকে সংযত রাখা, দুই ঘরে অবস্থান করে সময় পার করা , বাইরে অপ্রয়োজনে বের না হওয়া, এবং লোকদের বৈঠকে বেশি বেশি না বসা । তিন অতীতের অন্যায়ের জন্য অনতপ্ত হওয়া ।
এবং এর ক্ষমার জন্য আল্লাহতালার দরবারে কান্নাকাটি করা । হাদিসটি বর্ণনা করেছেন ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল তিরমিজি (রাহ.), । উল্লেখিত হাদীস বিপদ দ্বারা দুনিয়ার বিপদ হতে পারে, আবার আখেরাতের বিপদ হতে পারে । তবে হাদীস ব্যক্তিদের ভাষ্য থেকে বোঝা যায় এই তিন বিষয়ের উপর আমল করলে, দুনিয়া ও আখেরাত উভয় জগতে বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে । আসুন আমরা প্রথম বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করি । এক অপ্রয়োজনীয়’ কথা থেকে নিজেকে সংযত রাখা । কথা আছে পা পিছলে যাওয়ার চেয়ে , জবান পিছলে যাওয়া বিপদ বেশি ।
কারণ এর ব্যাখ্যা নিজের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে কিন্তু অপ্রয়োজনে কথা বিপদ ডেকে আনবে, যা শুধু তার শরীরের কিছু অংশের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং পরিবার ধন-সম্পদ দাও এর দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে, এমনকি জীবন ঝুঁকিতে পড়তে পারে, এ বিষয়টি বোঝানোর জন্যই কোনো দলীল প্রমাণ পেশ করা প্রয়োজন নেই, সমাজে এর অসংখ্য ঘটনা খুঁজে পাওয়া যাবে ,তাই অপ্রয়োজনে কথা থেকে বিরত থাকা কথা, বলার আগেই নিজের বিষয়গুলোও অবস্থানের দিকে খেয়াল রেখে কথা বলা । নিজের জন্য উপকারী কথা না বলা অনেক কথা আছে যেগুলো বলা সবার মুখে মানায় না, যে কেউ একথা বললে মানুষের কাছে ভাবমূর্তি নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা আছে,
ওই কথাগুলো বলা থেকে বিরত থাকা, অপ্রয়োজনে কথা থেকে বিরত রাখার জন্য, ইসলাম মানুষকে অনেক নির্দেশনা দিয়েছে ,যেমন এক হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাম বলেন তোমরা জানো কোন কোন বিষয়ের কারণে মানুষ বেশি জান্নাতে যাবে ,প্রশ্ন করলে রাসূল সাল্লাহু সাল্লাম নিজে তার উত্তর দিলেন এবং বললেন আল্লাহতালার ভয় উত্তম চরিত্রের, এরপর তিনি আবার প্রশ্ন করলেন তোমরা জানো কি কোন কোন বিষয়ের কারণে মানুষ বেশি জাহান্নামে যাবে, তখনও তিনি এর উত্তর নিজেই দিলেন ,যে জবান ও লজ্জা লজ্জা স্থানের অপব্যবহারের কারণে মানুষ বেশি জাহান্নামে যাবে ।
আবু হুরাইরা (রা.) এর সূত্রে সুনানে তিরমিজি ও ইবনে মাজাহ নামক গ্রন্থে বর্ণিত হয়েছে ।
এক বর্ণনায় এসেছে মানুষ অনেক সময় এমন ভালো কথা বলে যার মর্যাদা সম্পর্কে সে নিজেও জানে না । এই কথা দ্বারা আল্লাহতালার অন্তকালের জন্য তার ওপর রাজি হয়ে যান । আবার অনেক সময় এমন মারাত্মক খারাপ কথা বলে যার অনিশ্চতার পরিমাণ সে নিজেও আন্দাজ করতে পারে না ।আল্লাহতালা এ কথার কারণে তার ওপর অনন্তকালের জন্য অসন্তুষ্ট হয়ে যান । উক্ত বর্ণনাটি সুনানে তিরমিজি ও ইবনে মাজাহ নামক গ্রন্থে বর্ণিত এসেছে ।
তাই কাজের কথা না থাকলে চুপ থাকাই ভালো মুসনাদে আহমদ সুমনের তিরমিজি ও ইমাম বায়হাকীর এক বর্ণনায় এসেছে । রাসুল (সাঃ), বলেন যে চুপ থাকে সে মুক্তি পায় ,ইমাম গাজ্জালী রহঃ এর অপব্যবহার এর ভয়াবহতা সম্পর্কে লিখেন রাসুল সালাম এর বক্তব্য ছিল সুস্পষ্ট যার শব্দ হতো কম কিন্তু কর্মরত অনেক গভীর ,যেখানে মানুষের জীবন পরিবর্তনের জন্য অনেক উপদেশ থাকতো, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর বক্তব্য যা সকলের পক্ষে বোঝা সম্ভব নয় ।
সাধারণ আলেমগণ ও বুঝতে পারেন না, এমন একটা বক্তব্য হচ্ছে জবানকে সংযত রাখার বিষয়টি । প্রতিটি বিপদ থেকে রক্ষার জন্য জবানকে সংযত করার কথা বলেছেন কারণ জবানের অপব্যবহারের কারণে যে গুনাহ ও অন্যায়গুলো হয় তা হচ্ছে ভুল বলা মিথ্যা বলা একজনের কথা আরেকজনের কাছে নিয়ে লাগানো কুটনামি করা অন্যের দোষ চর্চা করা লৌকিকতা লোকদেরকে শুনানোর জন্য কোন কিছু করা কথা ও কাজে মিল নাথাকা অশ্লীল ভাষা ব্যবহার অনর্থক তর্ক-বিতর্ক অসত্য বিষয়ক তথ্য প্রমাণের জন্য চাপাবাজি ইত্যাদি ।
চুপ থাকলেই এই অন্যায়গুলো থেকে রক্ষা পাওয়া যায় । মানুষ ও প্রকৃতি কারণে এগুলো করতে উৎসাহ বোধ করে এগুলো করতে পারলে খারাপ আত্মা আনন্দ বোধ হয় ,তাছাড়া এগুলো কারণ শয়তান তো লেগেই আছে ,এগুলো জবানের অপব্যবহারের ভয়াবহতার দিক, যারা কথা বেশি বলে তারা অনেক সময় প্রয়োজনীয় বিষয়ে কথা বলতে পারেনা, কিন্তু অপ্রয়োজনে বিষয় নিয়ে বাড়াবাড়ি ,করেন অতএব চুপ থাকার মধ্যে নিরাপদ থাকার অনেক ফায়দা রয়েছে ,যেমন চিন্তা বিক্ষিপ্ততা দূর হওয়া নতুন নতুন চিন্তার আসা ,গভীরতা বজায় থাকা ইবাদত জিকিরে মশগুল থাকা ইহকালীন ও পরকালীন জগতে অপ্রয়োজনীয় কথা , অভূত ফলাফল থেকে রক্ষা পাওয়া যাই ইত্যাদি ।
আল্লাহতালার বানী মানুষ যে কথায় বলে তার কাছে রয়েছে একজন রক্ষী । অর্থাৎ
ওই রক্ষী তার কথাকে নোট করে রাখে পরকালের এর হিসেবে অবশ্যই দিতে হবে আল্লাহ তা’আলা এই বাণীও মানুষকে চুপ
থাকার শিক্ষা দেয় এরপর ইমাম গাজলি (রাহ .) মানুষের কথা কে চার ভাগে ভাগ করেছেন । (মিরকাত শরহে মিশকাত,খন্ড-৮, পৃষ্ঠা ৫৮২)যার বিস্তারিত আলোচনা রয়েছে ।
চলুন জেনে নেয়া যাক ফেসবুক ও প্রয়োজনীয় কথা নিয়ে । ইমাম গাজ্জালী (রাহ.) কথা কে চার ভাগে ভাগ করেছেন, এর এক ভাগ হচ্ছে যার মাঝে কোন লাভ নেই, ক্ষতিও নাই ।
এই প্রকার সম্পর্কে তিনি বলেছেন, ওই কথা যার কোনো লাভ বা ক্ষতি নেই ,শরীয়তের পরিভাষায় একে ফুজুল বা অনর্থক কথা বলে, অনর্থক কথা লিপ্ত হলে সময় নষ্ট হয়, আর এটা এমন ক্ষতি বা প্রকাশ বলে বোঝানোর প্রয়োজন নেই ,যে অনর্থক কথা আমাদের কি পরিমাণ সময় নষ্ট করে মানুষের জীবনকে আল্লাহতালা দিয়েছেন কাজে লাগিয়ে ইহকাল ও পরকাল সফলতা অর্জনের জন্য, জীবন্ত এমন কোন বস্তুর নাম নয় যে সর্বদা এক অবস্থায় থাকে জীবন হচ্ছে কিছু সময়ের সমষ্টি ।কিছু সময় অতিবাহিত হওয়া মানে জীবনের একটা অংশ কেটে পড়ে যাওয়া ।
ঈমান গাজালি (রা.) অনর্থক কাজে সময় নষ্ট করা কে প্রকাশ্য ক্ষতি হলেও আমরা সেই প্রকাশ্য বিষয়টাকে বুঝতে পারছিনা ঘন্টার পর ঘন্টা ফেসবুক ইন্টারনেট পার করে দিচ্ছি যার ক্ষতি ছাড়া আর কিছুই নয় সম্ভবত এক হাদীসে এসেছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাম বলেছেন কোন ব্যক্তির উপর থেকে আল্লাহর রহমতের দৃষ্টি উঠে যাওয়ার আলামত হচ্ছে অনর্থক কাজে সময় নষ্ট করা । তাই জীবনকে সুন্দর ও সুশৃঙ্খল করতে হলে ফেসবুকে অনর্থক কথা লেখালেখি ছাড়তে হবে, মন দিতে হবে বাস্তব জগতে দিকে ।
দ্বিতীয় নাম্বারের দিকে আসি ঘরে সময় ব্যয় করা ,ঝামেলাও বিপদ থেকে বাঁচার উপায় হল ঘরে সময় ব্যয় করা ,আমরা আজ এই কথা বাস্তবতা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি, আজ সন্তানের বাইরে থাকা বাপের জন্য আতঙ্ক স্বামীর বাইরে থাকায় স্ত্রীর জন্য আতঙ্ক এমনিভাবে যে লোক বাহিরে প্রয়োজনে বেশি সময় দেয় তার ব্যাপারে সবাই ভয় থাকে যে কোনো ঝামেলায় জড়িয়ে যায় কিনা ।
তাই রাসুল সালাম উপদেশ ঝামেলা থেকে বাচতে চাইলে ঘরে সময় পার করতে হবে বর্তমান কাল সম্পর্কে আরবি ভাষায় একটা প্রবাদ আছে যার অর্থ হলো চুপ থাকো ঘরে বসে সময় পার করো দিন টা দিন এই ব্যবস্থা করো আরও বলেছেন (সাঃ) ঘরে বসে সময় পার করার কথা বলেছেন যেন ঘরে বসে আল্লাহর জিকির
আল্লাহর জিকির ইবাদত ও বাইরের লোকদের সঙ্গে মেলামেশা থেকে বিরত থাকা যায় । মোট কথা হল বাইরে সময় বের করা দ্বীনি ও জাগতিক উভয় দিক থেকে ক্ষতিকর ।
এখন কেউ যদি ঘরে বসে সারাদিন ইন্টারনেটে বিনোদনের সময় কাটায় এবং টেলিভিশন চ্যানেল হিন্দি সিনেমা ইংলিশ সিনেমা দেখে তাহলে তো অবশ্যই সেটা বাইরে ক্ষতির চেয়ে কোন অংশে কম নয় ,আবার বাইরে একেবারে বের হওয়া বন্ধ করে দেওয়ার কথা বলা হয়নি ,দিনের কাজের জন্য তিনি বন্ধুদের সাথে সৎকারের জন্য আল্লাহর দ্বীন প্রচারের জন্য আপনাকে ঘরের বাইরে বের হতেই হবে, কিন্তু অপ্রয়োজনীয়’ আড্ডা যতটা নিয়ন্ত্রণ করে দূরে থাকা যায় ততই ভালো আজকে অনেক লোককে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে দেখা যায় কিন্তু পরিবারের সময় দেয় না এতে সন্তানও আস্তে আস্তে বাইরে সময় দিতে শুরু করে এরপর বখাটেদের সংস্পর্শে মাদকাসক্ত ইভটিজিং ও বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে,এর প্রতিকার হতে পারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাম এর ঘরে সময় দেয়া হাদিসের শিক্ষা দ্বারা ।
আসুন তিন নাম্বার পয়েন্ট নিয়ে আলোচনা করি অতীতের অন্যায় অপর অনুতপ্ত হয়ে সে কাজ ছেড়ে দেয়া এবং আল্লাহ তালার কাছে ক্ষমা চাওয়া শয়তানের প্রচারণা মানুষের ভুল কাজ করতে পারে। কিন্তু মানুষ বুঝতে পারে যে যে সে ভুল পথে পা বাড়াচ্ছে তৎক্ষণাৎ সে থেকে ফিরে আসা। এটা এটাই ইসলামের শিক্ষা কেননা বিপদ থেকে বাঁচতে আল্লাহ রাসুল এর 3 নং পয়েন্ট ছিল অতীতের অন্যায়ের জন্য তওবা করা. এটা করতে পারলে অনেক ঝামেলা থেকে রেহাই পাওয়া যায় অন্যের ওপর অটল অবিচল থাকলে মানুষের জীবন ধ্বংস হওয়ার অনিবার্য।
একাধিক হাদিসে এসেছে রাসূলুল্লাহ (সাঃ), বলেন প্রত্যেক আদম সন্তানই গুনাহ করতে পারে। কিন্তু গোনাগারদের মধ্যে উত্তম হচ্ছে সে যে-কোনো গুনাহ করার পর তওবা করে ফিরে আসে. তাই অন্যায় করার পর তওবা করে ফিরে আসা. আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামিন আমাদের প্রত্যেককে আল্লাহ রাসুল (সাঃ) বিপদ থেকে বাঁচতে মহান তিনটি উপদেশ এর ওপর সব সময় আমল করার তৌফিক দান করুন । আমিন !!!!
দিন ও আখিরাত সম্পর্কে আরও ভালোভাবে জানতে যুক্ত হোন আমাদের ইসলামিক গ্রুপে: https://www.facebook.com/groups/455043089025257
এবং FOLLOW করুন আমাদের ইসলামিক ফেসবুক পেজ :
https://www.facebook.com/Dhaka-news-24-100804915516889/
YOUTUBE ইসলামিক ভিডিও দেখতে এখনই আমাদের ইসলামিক চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন: