পেছনে দাঁড়িয়ে আছেন দুজন সশস্ত্র তালেবান যোদ্ধা। সেভাবেই টেলিভিশনে খবর পড়ছেন সংবাদ উপস্থাপক। দর্শকদের উদ্দেশে তিনি বলছেন, ভয় পাবেন না। আফগানিস্তানের এই সংবাদ উপস্থাপকের ভিডিও সোমবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
বিবিসির সাংবাদিক কিয়ান শরীফি আফগান টিভির পিস স্টুডিওর রাজনৈতিক বিতর্ক অনুষ্ঠানের ওই ৪২ সেকেন্ডের ভিডিওটি টুইটারে পোস্ট করেছেন।
ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতা দখলের পর তালেবান আফগানিস্তানে স্বাধীন গণমাধ্যমের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তালেবান। কিন্তু ওই ভিডিও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রতিনিধিত্ব করে না বলে মন্তব্য করেছেন অনেকেই।
ভিডিওটি টুইটারে শেয়ার করে ইরানি নারী সাংবাদিক মাসিহ আলিনেজাদ লিখেছেন, কী অদ্ভূত। তালেবান জঙ্গিরা এই ভীত টেলিভিশন উপস্থাপকের পেছনে বন্দুক নিয়ে অবস্থান করে তাকে ‘ভয় পাবেন না’ বলতে বাধ্য করছে। তালেবান নিজেই লাখ লাখ মানুষের মনে ভয়ের পরিপূরক। এটা তারই আরেকটি প্রমাণ।
মুখে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রতিশ্রুতি দিলেও গত সপ্তাহেই ডয়েচে ভেলের এক সাংবাদিককে না পেয়ে তার আত্মীয়কে হত্যা করেছে তালেবান। এছাড়া আরও তিন সাংবাদিকের খোঁজে তাদের বাড়িতে তালেবান অভিযান চালিয়েছে বলে ডয়েচে ভেলে জানিয়েছে।
কাবুলে টোলো নিউজের এক দায়িত্বরত সাংবাদিক ও ক্যামেরাপারসনকে তালেবান যোদ্ধারা মারধর করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
তালেবান দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতা দখলের পর সাংবাদিকের ওপর হামলার অন্তত সাতটি ঘটনা ঘটেছে বলে রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারের বরাত দিয়ে ডয়েচে ভেলে জানিয়েছে।
এদিকে, তালেবানের ভয়ে দেশ থেকে পালিয়ে গেছেন স্থানীয় টেলিভিশন চ্যালেন তোলো নিউজের নারী সাংবাদিক বেহেস্তি আরঘান্দ। প্রথমবারের মতো লাইভে তালেবানের মিডিয়া টিমের সদস্য মাওলানা আবদুল হক হেমাদের সাক্ষাৎকার নিয়ে বিশ্বজুড়ে শিরোনামে এসেছিলেন এই নারী সাংবাদিক।
দুদিন আগেই টেলিভিশন ও রেডিও চ্যালেনগুলোতে নারী কণ্ঠ সম্প্রচারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে তালেবান। এর আগে দেশটিতে গানবাজনা নিষিদ্ধ করেছিল রক্ষণশীল এই সংগঠনটি।
শনিবার আফগানিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলীয় কান্দাহারের শীর্ষ স্থানীয় একটি রেডিও চ্যানেলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর এই ঘোষণা দেয় তালেবান।