হুয়াওয়ে’র কাছে মার্কিন প্রযুক্তি সরবরাহে সীমাবদ্ধতা থাকলেও উৎপাদন চালিয়ে যেতে নির্দিষ্ট কিছু দল জটিল সরবরাহ প্রক্রিয়া চালিয়ে গেছে। ফলে সার্বিকভাবে আয় বেড়েছে প্রতিষ্ঠানটির।
জাতীয় নিরাপত্তার ঝুঁকির কথা বলে মার্কিন বাণিজ্য বিভাগের তালিকায় যোগ করা হয়েছে হুয়াওয়ের নাম। ফলে বিশেষ অনুমোদন ছাড়া হুয়াওয়েকে পণ্য ও প্রযুক্তি সরবরাহ করতে পারবে না মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলো। বর্তমানে বিশ্বের বৃহত্তম টেলিযোগাযোগ যন্ত্রাংশ নির্মাতা ও দ্বিতীয় স্থানে থাকা স্মার্টফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে।
বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রথমার্ধে আয় ৩০ শতাংশ বাড়লেও বছরের প্রথম তিন মাসের চেয়ে বৃদ্ধি কিছুটা কমেছে। প্রথম তিন মাসে হুয়াওয়ের আয় বেড়েছে ৩৯ শতাংশ। আর ২০১৮ সালের প্রথমার্ধের চেয়ে আয় বেড়েছে সামান্য। পঞ্চম প্রজন্মের নেটওয়ার্কিং যন্ত্রাংশ সরবরাহের চুক্তি ধরে রেখেই আয় বৃদ্ধির ধারা ঠিক রেখেছে প্রতিষ্ঠানটি।
মার্কিন নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও আয় বাড়াতে সহায়তা করায় হুয়াওয়ের এক কর্মীকে পুরস্কৃত করা হয়েছে বলেপ্রতিবেদনে জানিয়েছে ব্লুমবার্গ।
চলতি মাসেই এবছর আয় কমবে বলে ধারণা দিয়েছিলো হুয়াওয়ে। প্রতিষ্ঠান প্রধান রেন ঝেংফেই বলেন মার্কিন নিষেধাজ্ঞার প্রভাব যতোটা ধারণা করা হয়েছিলো তার চেয়ে বেশি।
প্রতিবেদনে সিএনএন বলছে, বিশ্বের অন্য সব কোম্পানির চেয়ে বেশি টেলিকমিউনিকেশন যন্ত্রাংশ বিক্রি করে হুয়াওয়ে। আর এখন স্মার্টফোন বাজারে এমন এক প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছে যে কিনা স্যামসাং ও অ্যাপলের জন্য ঝুঁকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র গত ১৬ মে হুয়াওয়কে কালো তালিকাভুক্ত করে। মার্কিন কোম্পানিগুলোকে সেই সময় ওয়াশিংটন নির্দেশ দিয়েছিল, হুয়াওয়ের সঙ্গে বাণিজ্য চালাতে গেলে লাইসেন্স নিতে হবে।
হুয়াওয়ের চেয়ারম্যান লিয়াং হুয়া মঙ্গলবার বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও কোম্পানির কার্যক্রম সাবলীলভাবে চলছে। কোম্পানির মূল উৎপাদনে তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি।
লিয়াং হুয়া বলেন, মার্কিন বাণিজ্যের এই অবরোধ কোম্পানির উন্নয়নে কিছুটা প্রভাব রেখেছে, কিন্তু ওই প্রভাব নিয়ন্ত্রণের যথেষ্ট উপায়ও আছে। চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে নগদ অর্থের প্রবাহ ইতিবাচক ছিল। এই অর্থ কাজে লাগিয়ে কোম্পানি দীর্ঘ মেয়াদি টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পারবে।
তবে সামনে যে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জও আছে সেটাও স্বীকার করেছেন লিয়াং। তিনি বলেন, ‘সত্য হলো, আমরা বাধার মুখে পড়ছি। চলতি বছরের দ্বিতীয় অর্ধে অথবা পরের বছরেও আমাদের এই সমস্যা মোকাবিলা করতে হতে পারে।’
যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধের বলি হয় হুয়াওয়ে। এমনকি হুয়াওয়ের ওপর অবরোধ চাপানোরও আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্র কোম্পানিটির ব্যবসা পরিচালনায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছিল।
ওয়াশিংটন তার মিত্রদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিল, তারা যেন ফাইভ-জি প্রযুক্তির জন্য হুয়াওয়ের সাহায্য না নেয়। এ সময় যুক্তরাষ্ট্র যুক্তি দেখিয়েছিল, ফাইভ-জি প্রযুক্তির অবকাঠামো নির্মাণের মাধ্যমে হুয়াওয়ের থেকে বিভিন্ন গোপনীয় তথ্য হাতিয়ে নিতে পারে চীন। যদিও হুয়াওয়ে বারবার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।