একজন সাহসীযোদ্ধা ছিলেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পাইলট ক্যাপ্টেন নওশাদ আতাউল কাইউম। বিমান পরিচালনা করতে গিয়ে কঠিন বিপদে পড়লেও তিনি সাহস হারাননি। সেই দুঃসাহসী ক্যাপ্টেনের নিথর দেহ কাঁধে নিয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েছেন তার সহকর্মী পাইলটরা।
বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিজি-০২৬ ফ্লাইটে ক্যাপ্টেনের মরদেহ ঢাকায় আনা হয়।
এদিকে তার মরদেহ বহনকারী ফ্লাইটটি রানওয়েতে অবতরণের আগে সেখানে উপস্থিত ছিলেন সহকর্মী পাইলটরা। প্রয়াত সহকর্মীর মরদেহ ফ্লাইট থেকে নিজেরাই নামিয়ে নিয়ে আনেন।
এরপর বিমান বাংলাদেশ ও ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের প্রায় অর্ধশতাধিক পাইলটের দল মাথা থেকে ক্যাপ সরিয়ে তাকে সালাম প্রদান করেন। এ সময় সহকর্মীকে হারিয়ে আপ্লুত দেখা যায় পাইলটদের। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাহসী এই সহকর্মীর কফিনটি কাঁধে নিয়ে লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সে তুলে দেন পাইলটরা।
গত ২৭ আগস্ট বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট ওমানের মাসকাট থেকে ঢাকায় ফেরার সময় মধ্য আকাশে হার্ট অ্যাটাক করেছিলেন তিনি। বিষয়টি আঁচ করতে পেরে বিমানের সেকেন্ড পাইলট তাৎক্ষণিকভাবে নাগপুরে জরুরিভিত্তিতে বিমানটি অবতরণ করান। বিমানের সিডিউল ফ্লাইট ‘বিজি ০২২’ ফ্লাইটে এ ঘটনা ঘটে। ওই ফ্লাইটে ১২৪ জন যাত্রী ছিলেন।
ফ্লাইটটি অবতরণের পর ক্যাপ্টেন নওশাদকে নাগপুরের কিংসওয়ে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে দুই দিন চিকিৎসার পর অবস্থার অবনতি হলে ২৯ আগস্ট তাকে হাসপাতালের সার্জিক্যাল ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (এসআইসিইউ) কোমায় নেওয়া হয়। সেখানে তাকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়। হার্ট অ্যাটাকের পর তার মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয় বলে জানিয়েছিলেন হাসপাতালের চিকিৎসকরা। তবে চিকিৎসকদের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে ৩০ আগস্ট বেলা ১১টার দিকে না ফেরার দেশে চলে যান ক্যাপ্টেন নওশাদ।
এটাই ক্যাপ্টেন নওশাদের প্রথম সলফতা নয় এর আগেও ২০১৬ সালে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আরেকটি দুর্ঘটনার হাত থেকে ১৪৯ যাত্রী আর সাত ক্রু’র জীবন বাঁচিয়েছিলেন ক্যাপ্টেন নওশাদ।
তার এই দুঃসাহসিকার কারণ ২০১৭ সালে ক্যাপ্টেন নওশাদকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে প্রশংসাপত্র পাঠায় আন্তর্জাতিক পাইলট অ্যাসোসিয়েশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ক্যাপ্টেন রন অ্যাবেল।