আইকোনিক ফোকাস ডেস্কঃ অভিনেতা হিসেবে জনপ্রিয় ও প্রশংসিত ফজলুর রহমান বাবু। কিন্তু সেই অভিনয় নিয়েই মনে কষ্ট পুষে রেখেছেন তিনি। চেয়েছিলেন ক্যারিয়ারজুড়ে পুরোটা সময় নিয়মিত মঞ্চনাটক করে যাবেন। অনেক চেষ্টা করেও সেই মঞ্চনাটক করে টিকে থাকতে পারেননি তিনি।অবশেষে, বাধ্য হয়েই টেলিভিশন নাটকে অভিনয় করতে এসেছিলেন। এখন বেশির ভাগ নাটকের অভিনয় নিয়েই তিনি মানসিকভাবে সন্তুষ্ট নন। একটি ভালো চরিত্র না পাওয়ার কষ্ট মনে নিয়েই বাড়ি ফিরতে হয় শুটিং থেকে।
ছোট পর্দা, বড় পর্দা আর গান-তিন মাধ্যমেই প্রায় সমান জনপ্রিয় ফজলুর রহমান বাবু। তবে তাঁর নিজের কাছে পছন্দের মাধ্যম চলচ্চিত্রে অভিনয় করা। মাসের বেশির ভাগ সময়েই নাটক নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়। সেই নাটকের শুটিং কেন টানে না তাঁকে? জানতে চাইলে বাবু জানান, এখন নাটকের বাজেট কম। তাড়াতাড়ি করে কাজ করতে হয়। বেশির ভাগ গল্পই পছন্দ হয় না। তাই দিন শেষে অসন্তুষ্টি নিয়ে কাজ শেষ করতে হয়।
গুণী এই অভিনেতা বললেন, ‘বাধ্য হয়ে অনেক নিম্নমানের গল্পে কাজ করতে হয়। গল্প ও নাটকের নাম নিয়ে একটা অসুস্থ প্রতিযোগিতা চলছে, তা ছাড়া কাজ দ্রুত শেষ করতে হবে। দর্শকদের বিনোদন দেওয়ার জন্য কমেডি নির্মাণ হচ্ছে। জোর করে মানুষ হাসানোর চেষ্টা আর কত? এসব কারণে এখন আর নিম্নমানের গল্পে কাজ করছি না। সিনেমায় চরিত্র নিয়ে সময় পাওয়া যায় ,তাই সময় নিয়ে অভিনয় করা যায়। এই জন্য সিনেমা এখন আমাকে খুব টানে।’
গত কয়েক বছরে ‘বিকেল বেলার পাখি’, ‘মায়া’সহ হাতে গোনা ৮–১০টি নাটকে অভিনয় করে মানসিকভাবে সন্তুষ্ট হতে পেরেছেন এই অভিনেতা। তবে মঞ্চনাটকের ক্ষেত্রে শতভাগ খুশিতে সব কাজ শেষ করতে পারতেন। ক্যারিয়ারের প্রথম দিকে তিনি আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন মঞ্চেই থেকে যাওয়ার। কিন্তু বাস্তবতা হল আলাদা, তাই তিনি বাস্তবতার কাছে হেরে নাটকে অভিনয় শুরু করেন।
বাবু বলেন, ‘অভিনয় আমাকে শান্তি দেয়। সেই অভিনয় নিজের মতো করে করতে পারছি না। এর মতো কষ্ট আর নেই। দিনের পর দিন অভিনয় করে যাচ্ছি কিন্তু সন্তুষ্ট হতে পারছি না। থিয়েটার ছেড়ে খেয়ে–পরে বাঁচার জন্য নাটকে অভিনয় শুরু করলাম। সেই নাটকও এখন আগের জায়গায় নেই। এদিকে আমাদের দেশে সেভাবে থিয়েটারই নেই। ঢাকায় যে থিয়েটার রয়েছে, সেখানে শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দূরবর্তী হওয়ার কারণে দর্শক সেভাবে আসছে না।
বাবু আরও বলেন, ‘আমার ভাগ্য ভালো যে কিছু ভালো নির্মাতা এখনো আমাকে চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য ডাকেন। তাঁদের চলচ্চিত্রে আমার বয়সী একজন মানুষের জায়গা হয়। এই কাজটাও আমাকে খুবই টানে। অনেক দিন ধরে চলচ্চিত্রে কাজ করতে পারছি না। এই কারণেও মন কিছুটা খারাপ। পাঁচটি সিনেমার শুটিং শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। করোনার কারণে সেগুলো বারবার পিছিয়ে যাচ্ছে।
লকডাউন শুরুর পর থেকে শুটিং থেকে দূরে ছিলেন এই অভিনেতা। ঈদের পর সম্প্রতি কাজে ফিরেছেন তিনি। জানালেন, ‘হাউস নং-৯৬’ ধারাবাহিকে অভিনয় করছেন তিনি। যেখানে একেকটি গল্প নিয়ে একেকটি পর্ব সাজানো হয়েছে।