আইকোনিক ফোকাস ডেস্কঃ আযুজুবিল্লাহ হিমিনাস সাইতোয়ানির রাজিম। বিসমিল্লাহ হির রাহমানির রাহিম।আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।
কে না চায় আল্লাহ মহানের কাছে তার দোআটি কবুল হোক? একজন মুমিন মুসলিমের জীবনের মহান প্রভুর দরবারে দোআ-প্রার্থনা এবং আকুতি-রোনাজারি অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। কতভাবেই কত সময়ই তো আমরা মহান প্রভুকে ডাকি কিন্তু আমরা কি জানি যে ঠিক কখন কখন একজন মুমিনের কোনো দোআ, কোনো প্রার্থনাই আল্লাহ তায়ালঅ ফিরিয়ে দেন না। হাদিস পাকে উল্লেখিত পাঁচটি সোনালী সময় যখন আসমানের দুয়ার প্রত্যেকটি বান্দার জন্য খুলে দেওয়া হয়।
শুধুমাত্র পেশাদার বেবিচারিনি এবং ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদাবাজি করা লোক ব্যতিত। কোনো মুসলিমের দোয়া তখন ব্যর্থ হয় না। আল্লাহু আকবার। আল্লাহ তায়ালা বান্দাকে তাঁ নিকট দোয়া প্রার্থনা করার তাগিদ দিয়েছেন। হাদিসে এসেছে যে ব্যক্তি আল্লাহ তায়ালার নিকট কোনো কিছু চায় না, ঐ ব্যক্তির উপর আল্লাহ তায়ালা রাগান্বিত হন। দৈনন্দিন জীবনে দোয়া কবুলের ৫ টি সোনালী সময় রয়েছে, যে সময় আসমানের দরজা সমূহ পুরোপুরি উন্মুক্ত করে দেন।
এক. জোহরের পূর্বমুহূর্তে : রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, নিশ্চই আসমানের দুয়ারসমূহ খুলে দেওয়া হয় সূর্য মধ্যাকাশ থেকে পশ্চিমাকাশের দিকে হেলে পড়ার সময়। এরপর জোহরের সালাত পর্যন্ত তা আর বন্ধ হয় না। আমি চাই সেই সময়ে আমার কোন ভালো কাজ ওপরে উঠুক। (সহীহুল জামি, ১৫৩২) দুই. আজানের সময় : রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যখন আজান দেওয়া হয় তখন আসমানের দুয়ার সমূহ খুলে দেওয়া হয় এবং দোআ কবুল করা হয়। (সহীহুত ত্বারগীব, ২৬০)
তিন. এক নামাজের পর অন্য নামাজের জন্য অপেক্ষার সময় : রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমরা এই মর্মে শুভ সংবাদ গ্রহণ কর যে, তোমাদের রব আসমানের দুয়ার খুলে দিয়েছেন এবং তোমাদের নিয়ে ফেরেশতাদের সাথে গর্ব করে বলছেন, ‘আমার বান্দাগণ আমার আরোপিত এক ফরজ (নামাজ) আদায়ের পর আরেক ফরজের জন্য অপেক্ষা করছে’। সুবাহান আল্লাহঅ (ইবনে মাজাহতে হাদিসটি বর্ণনা হয়েছে।
আর রাতের শেষ অংশের কথঅ কি বলব? রাতের শেষার্ধে : রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, রাতের শেষার্ধ শুরু হলে একজন ঘোষক ঘোষণা দিতে থাকেন, কোন আবেদন পেশকারী কি আছে? তাঁর আবেদন গ্রহণ করা হবে। কারো চাওয়া পাওয়ার কিছূ আছে কি? তাঁর চাওয়া পাওয়া কবুল করা হবে। আছে কোনো বিপদগ্রস্থ ব্যক্তি? তাকে বিপদ থেকে মুক্ত করা হবে। তখন পেশাদার ব্যভিচারীনী ব্যতিত কোনো মুসলিমের দোআ ব্যর্থ হয় না। সুবাহান আল্লাহ। আমরা কোনো ভাইই যেন শেষ রাতের দোয়া থেকে বঞ্চিত না হই। আল্লাহ পাক আমাকেও যেন শেষ রাতের দোয়া থেকে বঞ্চিত না করে।
আর এসময় তাজবিহ পাঠের সময়। ’আল্লাহু আকবার কাবিরা, ওয়াল হামদু লিল্লাহি কাছিরা, ওয়া সুবহানাল্লাহি বুকতারাও ওয়া আসিলা’ এই তাসবিহ পাঠের সময় আসমানের দরজা খুলে দেয়া হয়।
ইবনু উমার (রা.) বলেন, একদিন আমরা প্রিয়নবি (সাঃ) এর সঙ্গে নামাজ পড়ছিলাম। ওই সময় লোকদের মধ্য থেকে এক লোক বলে উঠলো- ’আল্লাহু আকবার কাবিরা, ওয়াল হামদু লিল্লাহি কাছিরা, ওয়া সুবহানাল্লাহি বুকতারাও ওয়া আসিলা’
অর্থাৎ আল্লাহ মহান, অতি মহান, আল্লাহ তায়ালার জন্য অনেক অনেক প্রশংসা এবং সকাল-সন্ধা আমি আল্লাহ তায়ালার পবিত্রতা বর্ণনা করছি।
রাসুল (সাঃ) নামাজ শেষ করে বললেন, এই কথাগুলো কে বলেছে? উপস্থিত লোকদের মধ্যে একজন বলল- হে আল্লাহর রাসুল, আমি বলেছি।প্রিয় নবি বললেন, এ দোয়ায় আমি খুব আশ্চার্যান্বিত হয়েছি। এ বাক্যগুলোর জন্য আসমানের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয়েছে। হযরত ইবনে উমর (রাঃ) বলেন, রাসুল (সাঃ) এর কাছে এ কথা শোনার পর থেকে এ তাসবিহর পাঠ আমি কখনো পরিহার করিনি। সুবাহান আল্লাহ।
আল্লাহ তায়ালা মুসলিম উম্মাহকে দোয়া কবুলের জন্য আসমানের দরজা খুলে দেয়ার গুরুত্বপূর্ণ ৫টি সোনালী সময়ে হাদিসের নির্দেশিত পন্থায় দুনিয়া ও পরকালের কল্যানে, দোয়া করার তৌফিক দান করুন। আমিন।