তালেবান মৃত নারীদেরও ধর্ষণ করেছে বলে দাবি করেছেন আফগানিস্তান থেকে পালিয়ে আসা সাবেক আফগান নারী পুলিশ সদস্য। ব্রিটিশ সংবাদপত্র দ্য সান ২৪ আগস্ট মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
ওই নারী পুলিশ সদস্য নিজেকে মুসকান বলে পরিচয় দিয়েছেন। তার দাবি, তালেবান সদস্যরা ধর্ষণ করার সময় জীবিত বা মৃত কী না তা বাদ বিচার করত না।
দীর্ঘ ২০ বছর পর তালেবান ফের ক্ষমতা দখল করলে ভয়ে ভারত পালিয়ে আসেন মুসকান।
ভারতের এক সংবাদমাধ্যমকে মুসকান জানান, তালেবান সদস্যরা নারীদের তুলে নিয়ে যেত। তাদের হত্যা করত। এমনকি তালেবান সদস্যদের মৃতদেহ ধর্ষণ করারও নজির আছে বলে দাবি করেছেন মুসকান।
ওই গণমাধ্যমকে মুসকান জানান, সেখানে (আফগানিস্তানে) আমরা নানা রকম আতঙ্কের মধ্য দিয়ে দিন কাটিয়েছি। আমাদের নানাভাবে হুমকি দেওয়া হত।
সেখানকার পরিস্থিতি এমন ছিল যে নারী কাজে যেতেন তিনি আর তার পরিবার ঝুঁকির মধ্যে থাকতেন।
এর আগে ১৯৯৬-২০০১ সালের শাসনামলে তালেবান নারীদের স্কুল ও কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। পুরুষ আত্মীয় ছাড়া নারীদের বাইরে যাওয়া নিষিদ্ধ ছিল। এমনকি বাইরে বের হওয়ার সময় নারীদের চেহারা দেখানো পুরোপুরি নিষিদ্ধ ছিল।
তবে এবার নিজেদের রক্ষণশীল মনোভাব থেকে অনেকটাই সরে এসেছে বলে দাবি করছে তালেবান। কাতারের দোহায় তালেবানের রাজনৈতিক দপ্তরের উপপ্রধান আব্দুস সালাম হানাফি নারী চাকরিজীবীদের কর্মস্থলে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।
তবে এই আশ্বাসের পরও আফগানিস্তান ছাড়তে মরিয়া হয়ে উঠেছে সাধারণ মানুষ।
কিছুদিন আগেই তালেবানের ভয়ে ছাত্রীদের রেকর্ড পুড়িয়ে দিয়েছেন আফগানিস্তানের একমাত্র মেয়েদের বোর্ডিং স্কুলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা শাবানা বাসিজ-রাসিখ।
তালেবান সদস্যরা যেন এই স্কুলের শিক্ষার্থীদের খোঁজ না পায় তাই এসব রেকর্ড পুড়িয়ে দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন শাবানা।
টুইটারে শাবানা ছাত্রীদের রেকর্ড পোড়ানোর ব্যাপারে লিখেছেন, আফগানিস্তানের একমাত্র মেয়েদের বোর্ডিং স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে আমি সব ছাত্রীর রেকর্ড পুড়িয়ে দিয়েছি। ছাত্রীদের মুছে ফেলতে নয়, তাদের ও তাদের পরিবারকে রক্ষা করতে।
অন্যদিকে, তালেবানের হাত থেকে বাঁচতে আফগান নারী ফুটবলারদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে থাকা নিজেদের অ্যাকাউন্ট ও পাবলিক পরিচয় মুছে ফেলার আর জার্সিসহ সব খেলার সরঞ্জাম পুড়িয়ে ফেলার আহ্বান জানিয়েছেন আফগান নারী ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক খালিদা পোপাল।