আইকোনিক ফোকাস ডেস্কঃ ইসলামের রয়েছে ৫টি স্তম্ব ।নামাজ হলো ইসলামের ৫টি স্তম্বের মধ্যে ২য় । আর নামাজ হলো বেহেশতের চাবি; গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতগুলোর একটি।
নামাজ আদায়ের মধ্য দিয়ে আমার আল্লাহ তালার নৈকট্য লাভ করে থাকি নামাজ আদায় করা ছাড়া জান্নাতের আশা করা যায় না। যারা নামাজ আদায়ের বিষয়ে উদাসীন আল্লাহ তাআলা তাদের দুর্ভোগের কথা বলেছেন মহাগ্রন্থ আল কোরআনে।
বিশ্ব নবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে যুদ্ধে থাকাবস্থায়ও নামাজ ছাড়তে নিষেধ করেছেন আল্লাহ রাব্বুল আলামিন। যুদ্ধরত অবস্থায় কী ভাবে নামাজ আদায় করবেন সেটাও বলে দিয়েছেন আল্লাহ রাব্বুল আলামিন।
পবিত্র কোরআনুল কারিমে আল্লাহ বলেন, ‘(হে নবী,) আপনি যখন তাদের মধ্যে উপস্থিত থাকেন ও তাদের নামাজ পড়ান, তখন (শত্রুর সঙ্গে মোকাবিলার সময় তার নিয়ম এই যে) মুসলিমদের একটি দল আপনার সঙ্গে দাঁড়াবে এবং নিজেদের অস্ত্র সঙ্গে রাখবে। অতঃপর তারা যখন সেজদা করে নেবে, তখন তারা তোমাদের পেছনে চলে যাবে এবং অন্য দল, যারা এখনো নামাজ পড়েনি, সামনে এসে যাবে এবং তারা আপনার সঙ্গে নামাজ পড়বে। তারাও নিজেদের আত্মরক্ষার উপকরণ ও অস্ত্র সঙ্গে রাখবে’। (সূরা: নিসা, আয়াত ১০২)
যুদ্ধের মতো কঠিন পরিস্থিতিতেও আল্লাহ জামাতের সঙ্গে নামাজ পড়ার তাগিদ দিয়েছেন। মহানবী (সা.) জামাতে নামাজ আদায়ে গাফিলতির ব্যাপারে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘যে ব্যক্তি আজান শুনে, তার কোনো অপারগতা না থাকা সত্ত্বেও জামাতে উপস্থিত হলো না, তার নামাজ হবে না’। (ইবনে মাজাহ ৭৯৩)
জামাতে নামাজ পড়া ওয়াজিব। বিনা কারণে জামাত ছেড়ে দেওয়া বড় অপরাধ। আল্লাহ নির্দেশ দিয়েছেন, আর তোমরা নামাজ কায়েম করো ও জাকাত দাও এবং যারা রুকু করে তাদের সঙ্গে রুকু করো। (সূরা: বাকারা, আয়াত: ৪৩)
একা নামাজ পড়ার চেয়ে জামাতে নামাজ আদায় করার গুরুত্ব অনেক বেশি। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, জামাতে নামাজ আদায় করা একাকী নামাজ আদায় করার চেয়ে ২৭ গুণ বেশি সওয়াবের। (বুখারি হাদিস ৬৪৫, মুসলিম হাদিস ৬৪০)
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আজান দেওয়া এবং প্রথম কাতারে দাঁড়ানোর মধ্যে যে কী মর্যাদা আছে, তা যদি মানুষ জানতে পারত, তাহলে তা পাওয়ার জন্য তারা প্রয়োজনে লটারি করত। দুপুরের নামাজের যে মর্যাদা, তা যদি তারা জানতে পারত, তাহলে তারা এটা লাভ করার জন্য প্রতিযোগিতায় লেগে যেত। এশা ও ফজরের নামাজের মধ্যে যে (তাদের জন্য) কী মর্যাদা রয়েছে, তা যদি জানতে পারত, তাহলে তারা হামাগুড়ি দিয়ে হলেও এসে নামাজে উপস্থিত হতো’। (মুসলিম হাদিস ৮৬৭)
১৪ কারণে অপারগতা প্রকাশ পেলে একজন ব্যক্তি জামাতে শরিক না হলেও গুনাহগার হবেন না। ১. অসুস্থতা, ২. হাত-পা কেটে যাওয়া, ৩. অন্ধ হওয়া, ৪. প্যারালাইজড হওয়া, ৫. মাত্রাতিরিক্ত দুর্বলতা, ৬. অধিক বৃষ্টি, ৭. রাস্তা কর্দমাক্ত হওয়া, ৮. অতিমাত্রায় শীত পড়া, ৯. ভয়ানক অন্ধকার হওয়া, ১০. সম্পদ ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকা, ১১. মানহানির আশঙ্কা, ১২. প্রাণনাশের ভয়। ১৩. সফরে রওনা হওয়ার সময়। ১৪. জামাতে নামাজ আদায় করলে ট্রেন, ফ্লাইট বা গাড়ি চলে যাওয়ার আশঙ্কা হলে জামাতে শরিক না হওয়ার অনুমতি আছে। (বোখারি, হাদিস ১১২৬, ৬২৬, ৬২৭, ৬৩১, বদরুল মুনির ৪/৪১৯, জমউল জাওয়ামে ১/৩০৫৮, মুসনাদে আহমাদ ৫৩০২, আবু দাউদ ৪৬৪, ইবনে মাজাহ ৭৮৫, তিরমিজি ১৩২, ইবনে মাজাহ ৭৮৫, আবু দাউদ ৪৬৪)