আইকোনিক ফোকাস ডেস্কঃ চা বিক্রেতা নাজমা। রাস্তার ধারে ছোট্ট একটি দোকান তার। স্বামী ছেড়ে যাওয়ার পর চা বিক্রি করেই সংসার চালাচ্ছেন তিনি। দুই সন্তানকে নিয়ে নাজমার সংগ্রামী জীবন নিমিষেই বদলে গেছে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক তাকে চাকরি দিয়েছেন। আর এই মানবিক গল্পের নেপথ্যে যার অবদান, তিনি হলেন ‘চিরকুট’ ব্যান্ডের ভোকাল, গীতিকার ও সুরকার শারমীন সুলতানা সুমি।
গেলো বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে চা বিক্রেতা নাজমার জীবন চিত্রের এপিঠ-ওপিঠ তুলে ধরেছেন সুমি।
‘অফিসের কাজে আজ বেশ সকালে বের হতে হয়েছিল মিটিং এর জন্য। আগারগাঁও। ওয়েদারের কারনে সব দোকান তখনও খোলেনি। আমরা রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে একটু সামনে যেতেই আইসিটি মিনিস্ট্রির সামনে একটা চা এর দোকান খুঁজে পাওয়া গেল।
অর্ডার দিতে গিয়ে দেখলাম চা-এর এই দোকান মালিক এর নাম নাজমা আপা। মহিলাকে দেখতে বেশ সম্ভ্রান্ত লাগলো। কৌতুহল থেকে কথা আগাতেই তার ব্যক্তিত্ব, ব্যবহার কথাবার্তায় মুগ্ধ হলাম। তার সম্পর্কে জানতে চাইলাম বললেন, তার ২ ছেলে-মেয়ে। ৪ বার অনেক কষ্টে সুদে টাকা যোগাড় করে স্বামীকে দেশের বাইরে পাঠিয়েছিলেন। বারবারই তিনি হতাশ করে উল্টো লোনের বোঝা মাথায় করে ফিরেছেন। পরে আর কোন দায়িত্ব না নিয়ে পালিয়েছেন।
তার মেয়েটা ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছে। ছেলেটা ক্লাস এইটে। চা বিক্রি করেই কোনমতে সব চালাচ্ছেন। কিন্তু তার চোখেমুখে কোন দারিদ্র নেই। তার কষ্ট একটাই মেয়ের বিয়ে দিতে পারছেন না, চা বিক্রি করেন বলে সবাই পিছিয়ে যান। তার এই দারুণ আত্মপ্রত্যয়ী সংগ্রাম দেখে এত মুগ্ধ হলাম যে, চা শেষ করে মিটিং-এ গিয়ে মাননীয় আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ভাইকে বললাম তার জন্য কিছু করা যায় কি না।
আমাদের টিমের সবাইকে অবাক করে দিয়ে পলক ভাই নাজমা আপাকে সাথে সাথে ডেকে পাঠালেন। তার চাকরি কনফার্ম করলেন। তার ছেলে-মেয়ে দুইজনের জন্য দুটো নতুন ল্যাপটপ দিলেন। তাদের ট্রেইনিং এর জন্য বলে দিলেন। নাজমা আপা কাঁদতে শুরু করলেন।
ঘটনার আকস্মিকতায় আমরা সবাই কি বলব বুঝতে পারছিলাম না। পলক ভাই আমার মত ক্ষুদ্র একজন মানুষের কথায় সম্মান রেখে আজকে যে অসাধারণ কাজটা করলেন, সত্যিই ধন্যবাদ দেওয়ার ভাষা নেই।