আইকোনিক ফোকাস ডেস্কঃ পাকিস্থলির গ্যাস্ট্রিক গ্ল্যান্ডে অতিরিক্ত এসিড নিঃসরণ হলে পেটে অ্যাসিডিটি বা গ্যাসের সমস্যা সৃষ্টি হয়। সাধারণত খাবার খাওয়ায় দীর্ঘ বিরতি, খালি পেটে থাকা বা অতিরিক্ত চা, অ্যালকোহল বা কফি পানের কারণে পেটে গ্যাসের সমস্যা সৃষ্টি হয়। এছাড়া মশলাদার খাবার খাওয়া, ভাজা-পোড়া খাবার, খাবার খাওয়ায় অনিয়ম, অতিরিক্ত মদপান, স্ট্রেস, ধুমপান, রাতে ঘুামনোর সময় খাবার খাওয়া, খাবার খাওয়ার পরপরাই শুয়ে পড়া প্রভৃতি কারণেও পেটে গ্যাস হতে পারে। অম্বল ঢেকুর তোলা, বুক জ্বালাপোড়া কিংবা কখনোও বা পেট ব্যাথা। অ্যাসিডিটি বা গ্যাসের কারণে এই সব লক্ষণগুলো দেখা দিতে পারে। শীতকালে এই সমস্যাগুলো একটু বেশিই হয় যেন। এমন কে আছেন যিনি গ্যাসের সমস্যার ভুগেন না ! কেউতো আবার দিন শুরুই করেন গ্যাসের ওষুধ খেয়ে। এই গ্যাসের কারণে শরীরে বাসাবাধে নানান অসুখ বিসুখ। তবে কিছু ঘরোয়া উপায়ে গ্যাসের সমস্যা থেকে মুক্তি মিলতে পারে। জেনে নেয়া যাক এমন কিছু উপায়-
১. কলা: কলা কার না প্রিয়! কলায় প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে, আর এটি প্রাকৃতিক অ্যান্টাসিড। অ্যাসিড রিফ্লাক্সের বিরুদ্ধে প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে। প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে একটা করে কলা খাওয়া যেতে পারে খালি পেটে।
২. তুলসী পাতা: তুলসী পাতার যে হরেক উপকার তা কমবেশি সবাই জানে। তুলসী পাতা পাকস্থলীতে শ্লেষ্মার মতো পদার্থ উৎপাদনে সাহায্য অরে। সকালে চায়ের মধ্যে কয়েকটা তুলসী পাতা ফেলে দিন। চায়ের সঙ্গে ফুটিয়ে খালি পেটে সেই চা খান। সুস্বাদু চায়ের পাশাপাশি গ্যাসের ব্যথা থেকে মুক্তি মিলবে দ্রুত।
৩. মৌরি: খাওয়ার পরে মৌরি চিবিয়ে খেলে অ্যাসিড হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। রাতের বেলা ঘুমাতে যাওয়ার আগে পানিতে মৌরি ভিজিয়ে রাখুন। পরের দিন সকালে খালি পেটে খান। কিংবা গরম পানিতে মৌরির সঙ্গে কয়েকটি পুদিনা পাতা দিয়ে ফুটিয়ে খেতে পারেন। গ্যাসের সমস্যা থেকে মিলবে প্রশান্তি।
৪. আদা-রসুন: আদা-রসুন গ্যাস, অম্বলের হাত থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে। আদা খাবার হজমেও সাহায্য করে। তাই খাওয়ার আধ থেকে এক ঘণ্টা আগে আদা কুঁচি করে বিটনুন দিয়ে খান। এতে খাওয়ার পরে গ্যাসের সমস্যা থাকবে না। রসুন শুধু রান্নায় স্বাদ বাড়ায় না। রসুনে থাকা প্রচুর পরিমাণে ফাইবার হজমে বেশ কাজে দেয়।
৫. জিরা: জিরা পেটের গ্যাস, বমি, পায়খানা, রক্তবিকার প্রভৃতিতে অত্যন্ত ফলপ্রদ।
৬. লবঙ্গ: দুই থেকে তিনটি লবঙ্গ মুখে দিয়ে চুষলে একদিকে বুক জ্বালা, বমিবমিভাব, গ্যাস দূর হয়। সে সঙ্গে মুখের দুর্গন্ধ দূর করে চমৎকারভাবে।
৭. টকদই: টকদইয়ে থাকে ক্যালসিয়াম, যা পাকস্থলীতে গ্যাস তৈরি হতে দেয় না। এর সঙ্গে বিটনুন মিশিয়ে খেতে পারেন। টকদইয়ে থাকা ল্যাকটিক অ্যাসিড হজম প্রক্রিয়াকে আরও শক্তিশালী বানায়।
এছাড়া ঘরোয়া আরও অনেক উপায় আছে যা নিয়মিত পালনে গ্যাস থেকে মুক্তি মেলে। তবে খাদ্যাভ্যাস মেনে চলার বিকল্প নেই। তবে সবকিছুকে আবার গ্যাসের ব্যাথা মনে করে বসে থাকা উচিত নয়। জরুরী মুহূর্তে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
৮. ডাবের পানি: ডাবের পানি পাকস্থলিতে শ্লেষ্মা উৎপাদনে সহায়ক। যা পাকস্থলিকে অতিরিক্ত গ্যাস সৃষ্টির ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করে। নিয়মিত ডাবের পানি পান করলে দেহের পিএইচ অ্যাসিডিক লেভেল ক্ষারীয় হয়ে যায়। ফলে গ্যাস-অম্বলের সমস্যা দূর হয়।
৯. ঠাণ্ডা দুধ: ঠাণ্ডা দুধ খেলে পাকস্থলির গ্যাস্ট্রিক এসিড স্থিতিশীল হয়ে আসে। দুধে আছে ক্যালসিয়াম যা পাকস্থলিতে এসিড তৈরি প্রতিরোধ করে। সুতরাং অ্যাসিডিটির সমস্যা হলেই এক গ্লাস ঠাণ্ডা দুধ পান করুন।
১০. এলাচ: এলাচ হজম ক্ষমতা বাড়াতে এবং পাকস্থলির খিঁচুনি দূর করতে সহায়ক। এটি অতিরিক্ত এসিড নিঃসরণের কুপ্রভাব দূর করে। দুটি এলাচ গুড়ো করে পানিতে সেদ্ধ করে পানিটুক পান করে নিন।