এর আগে প্রথম দফায় ৫ জনকে গ্রেফতার দেখিয়ে রবিবার সন্ধ্যা ৭টার দিক আদালতে নেয় পুলিশ। সোমবার (২ নভেম্বর) আরো ৫ জনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। তবে প্রথম দফায় গ্রেফতারকৃত ৫ জনকে হত্যা মামলায় ৫ দিন করে রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের পরিদর্শক মাহমুদুনবী। মঙ্গলবার রিমান্ড আবেদনের ওপর শুনানি হবে বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে। দ্বিতীয় দফায় গ্রেফতারকৃত খাদেমসহ ৫ জনকে সোমবার বিকালে আদালতে পাঠানো হতে পারে বলে পাটগ্রাম থানা পুলিশ জানিয়েছেন। এ ঘটনায় নিহত জুয়েলের চাচাত ভাই সাইফুল আলম, পাটগ্রাম থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহজাহান আলী ও বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সাঈদ নওয়াজ নিশাত বাদী হয়ে পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করেন।ঘটনার ভিডিও ফুটেজ দেখে আসামি শনাক্ত করে অভিযান চালিয়ে এ পর্যন্ত ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা সকলই বুড়িমারী এলাকার বাসিন্দা। আলোচিত তিনটি মামলায় জেলা গোয়ন্দা (ডিবি) পুলিশকে তদারকির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।প্রথম দফায় গ্রেফতারকৃতরা হলেন-ওই এলাকার ইসমাইল হোসেনের ছেলে আশরাফুল আলম (২২) ও বায়েজিদ (২৪), ইউফুফ আলী ওরফে অলি হোসেনের ছেলে রফিক (২০), আবুল হাসেমের ছেলে মাসুম আলী (৩৫) এবং সামছিজুল হকের ছেলে শফিকুল ইসলাম (২৫)।এদিক রবিবার (১ নভেম্বর) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মসজিদে কোরআন অবমাননার কোন ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের অভিযোগ ও তদন্ত দলের পরিচালক আল মাহমুদ ফাউজুল কবির। ঘটনাটিকে স্রেফ একটি গুজব বলে তিনি জানান। শনিবার বিকালে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের অভিযোগ ও তদন্ত টিমের পরিচালক আল মাহমুদ ফাউজুল কবির বলেন, আমরা মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন, উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) বিভিন্ন জনের সাথে কথা বলেছি। এতে মসজিদের ইমাম ও মুয়াজ্জিনের সাথে কথা বলে জানা গেছে , মৃত জুয়েল কোরআন অবমাননা করেনি। নিছক গুজব ছড়িয়ে তাক হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে। ঢাকা গিয়ে আগামী ৭ দিনের মধ্যে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানের কাছে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে বলও উল্লেখ করেন তিনি। পাটগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সুমন কুমার মোহন্ত মসজিদের খাদেমসহ ৫ জনক গ্রেফতারের বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার রাত বুড়িমারীতে কোরআন অবমাননার অভিযোগ তুলে আবু ইউনুস মো. সহিদুনবী জুয়েল নামে মানসিকভাবে অসুস্থ এক ব্যক্তিকে পিটিয় হত্যা করার পর তার লাশ পুড়িয়ে দিয়েছে একদল দুর্বৃত্ত।