আইকোনিক ফোকাস ডেস্কঃ নিজেদের মাঠে গতকাল স্ত্রাসবুর্গের বিপক্ষে লিগের ম্যাচ খেলতে নেমেছিল পিএসজি। দু’দলের মধ্যে শক্তির ব্যবধান আকাশ-পাতাল, ঘরের মাঠে পিএসজির জয় নিয়ে কেউ সন্দেহে ছিলেন বলে মনে হয় না। সবার অনুমানকে সত্যি করে দিয়ে পিএসজি জিতেছেও ৪-২ গোলে। একটি করে গোল করেছেন আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার মাউরো ইকার্দি, ফরাসি স্ট্রাইকার কিলিয়ান এমবাপ্পে, স্প্যানিশ উইঙ্গার পাবলো সারাবিয়া ও জার্মান মিডফিল্ডার ইউলিয়ান ড্রাক্সলার।
মেসি, নেইমার খেলতে নামেননি, নামেননি দি মারিয়াও। এই তিনজন খেললে এক এমবাপ্পে ছাড়া বাকি গোলদাতার কেউই পিএসজির মূল একাদশে সুযোগ পেতেন না, পিএসজি দলটাই এখন এমন চাঁদের হাট! খেলতে না নামলেও মাঠে ঠিকই এসেছিলেন মেসিরা। দলে নতুন আসা তারকাদের গত রাতে সমর্থকদের সামনে আনুষ্ঠানিকভাবে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে পিএসজি। বাদ্য-বাজনা, আতশবাজির মধ্য দিয়ে মেসিদের বরণ করে নিয়েছেন পিএসজির সমর্থকেরা, চর্মচক্ষে দেখেছেন স্বপ্নপূরণ হতে। মেসি এখন পিএসজির-এটা তো স্বপ্নপূরণই।
তবে মেসি দলে এলেও, মেসি-নেইমার-এমবাপ্পে ত্রয়ীকে বেশি দিন একসঙ্গে খেলতে দেখা যাবে কি না, সেটা নিয়ে সন্দেহ জেগেছে। আর সেটা জেগেছে এমবাপ্পের কারণেই। যে কারণে মেসিকে দেখে উদ্বেলিত পিএসজি সমর্থকেরা গতকাল এমবাপ্পেকে দুয়োও দিয়েছেন!
আর দিবেন না-ই বা কেন? সতীর্থ হিসেবে নেইমার ছাড়াও মেসির মতো একজনকে পাচ্ছেন, এটা জানার পরেও দলের সঙ্গে চুক্তি বাড়াচ্ছেন না এই ফরাসি স্ট্রাইকার। বর্তমান চুক্তি শেষ ২০২২ সালের জুনে, এরপর ফ্রি তে যেকোনো দলে পাড়ি জমাতে পারবেন এমবাপ্পে, যেভাবে এবার মেসি বার্সা ছেড়ে পিএসজিতে এলেন, সেভাবেই।
তবে পিএসজি সেটা হতে দেবে কেন? তারা বারবার জানিয়েছে, এমবাপ্পে প্যারিসেরই ছেলে, প্যারিস ছেড়ে কোথাও যাবেন না তিনি। পিএসজি ছাড়ার ইঙ্গিত কখনো দেননি এমবাপ্পে, তবে পিএসজির সঙ্গে চুক্তি নবায়নের প্রশ্ন এড়িয়ে গেছেন বারবার।
পিএসজির চেয়ারম্যান নাসের আল-খেলাইফি বলছেন মেসিকে পিএসজির খেলোয়াড় হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেওয়া ওই সংবাদ সম্মেলনে এমবাপ্পেকে নিয়ে বলেছিলেন, মেসির আসার পর এমবাপ্পের আর পিএসজি ছাড়ার কোনো অজুহাত থাকতে পারে না।
এর আগে এমবাপ্পে বলেছিলেন, এমন কোথাও তিনি যেতে চান, যেখানে ‘সব সময় শিরোপা জিততে পারবেন।’ শিরোপা পিএসজিও জেতে, কিন্তু এত দিনেও ইউরোপের সবচেয়ে মর্যাদার ট্রফি চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতা হয়নি প্যারিসের ক্লাবটির। এমবাপ্পেরও নয়। তাই বলে সেটা জয়ের চেষ্টার কী কমতি আছে? নেই। নেই দেখেই এবার দলে আনার হয়েছে মেসি-রামোসদের।
এমবাপ্পে পিএসজিতে থাকবেন কি না, এ প্রশ্নে পিএসজি চেয়ারম্যান সেদিন বলেছেন, ‘কিলিয়ান একজন পারিসিয়ান। সে খুবই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ মনোভাবের একজন খেলোয়াড়। সে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ দল চেয়েছিল। এখন আমাদের চেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ দল আর কোনোটিই নেই। (এখানে থাকা ছাড়া) আর কোনো কিছু করার কারণ নেই তাঁর।
কিন্তু এত কিছু সত্ত্বেও পিএসজির হয়ে নতুন চুক্তিতে সই করেননি এমবাপ্পে। এমন কিছু গুঞ্জনও চাউর হয়েছে, দলে মেসি আসায় অসন্তুষ্ট এমবাপ্পে। এখন আরও বেশি করে ছাড়তে চাইছেন পিএসজি। সেসব কথা পিএসজি সমর্থকদের কানেও গেছে নিশ্চিত। আর গিয়েছে দেখেই গত রাতে এমবাপ্পেকে সমানে দুয়ো দিয়েছেন তাঁরা। যখনই এমবাপ্পের পায়ে বল গেছে, নিজেদের এই তারকাকে নিয়ে মনের অসন্তুষ্টি প্রকাশে লুকোছাপা করেননি পিএসজি সমর্থকেরা।
এমবাপ্পে অবশ্য নিজের পারফরম্যান্সের ওপর সেই দুয়োর প্রভাব পড়তে দেননি। গোল তো একটা করেছেনই, ড্রাক্সলার আর সারাবিয়াকে দিয়ে আরও দুটি গোল করিয়েছেনও।