এই নিয়ম মানলে রাতে প্রশান্তিতে ঘুমাতে পারবেন

আধুনিক ব্যস্ত জীবনের সাথে তাল মেলাতে ভালো ঘুমের বিকল্প নেই। দৈহিক ও মানসিক প্রশান্তির জন্য নিদ্রা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জীবনের এক-তৃতীয়াংশের বেশি সময় মানুষ ঘুমিয়ে কাটায়।

স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে যতটা ঘুমের প্রয়োজন ঠিক সেই পরিমাণ ঘুমাতে পারছেন না বেশির ভাগ মানুষ। অফিস টাইমিংয়ের কারণ হোক বা কাজের চাপ যে কোনও পরিস্থিতিতেই ব্যাঘাত ঘটছে ঘুমের।

বিশেষজ্ঞদের মতে, খুব কম ঘুম বা খুব বেশি ঘুম কোনোটাই স্বাভাবিক নয়। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ক্ষেত্রে চার থেকে নয় ঘণ্টা ঘুম স্বাভাবিক এবং ছয় থেকে আট ঘণ্টা ঘুম হলো আদর্শ। দেখা গেছে, যারা নয় ঘণ্টা বা এর চেয়ে বেশি ঘুমান, তাদের মধ্যে বিভিন্ন রোগের প্রবণতা বেশি।

প্রযুক্তির কল্যাণে আমরা এখন অনেক সময় ব্যয় করি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ ইন্টারনেটে। এর একটা প্রভাব পড়ে মনোজগতে। এর ফল হিসাবে সময়মতো ঘুম না আসার মতো সমস্যাগুলো বেশি দেখা যাচ্ছে।

প্রতিদিন নিশ্চিন্তে ৬ থেকে ৮ ঘন্টার ঘুম না হলে প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল, হজমের সমস্যা, হৃদরোগের ঝুঁকি, হতাশা, ওজন বৃদ্ধি এমনকি চোখের সমস্যাও হতে পারে। সারাদিন পরে ঘুম যেমন-তেমন করে হলে তা শরীরের উপর প্রভাব আনে।

ভালো ঘুম না হলে সেটা শরীর ও মনকে নেতিবাচক প্রভাবিত করতে পারে৷ এবং তার প্রভাব পরের দিনের কাজের ওপর পড়বে৷ তাই রাতে শান্তি মতো ঘুমানোটা খুবই দরকার৷

পিঠের উপর ভর দিয়ে ঘুমানো অর্থাৎ চিৎ হয়ে ঘুমানো অনিদ্রা মোকাবেলা করার সেরা উপায়গুলোর মধ্যে অন্যতম৷ কারণ এটি আপনার মাথা, ঘাড় ও মেরুদন্ডকে নিরপেক্ষ অবস্থানে বিশ্রাম দেয়৷ যদিও ঘুমানোর এই অবস্থানটি জনপ্রিয় না৷ তবে বিশেষঞ্জরা নিশ্চিত করেছেন এটি ভালো ঘুমের জন্য সর্বোত্তম পছন্দগুলোর মধ্যে একটি৷

বিশেষজ্ঞদের মতে, শরীর সুস্থ রাখার জন্য সারাদিনে অন্তত ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমের প্রয়োজন।

ঘুম সঠিক না হলে নানারকম শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। ওজন বেড়ে যাওয়া থেকে মাথার যন্ত্রণা এবং আরও নানারকম শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়।

বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, যদি কারও ভালো ঘুম না হওয়ার সমস্যা থাকে, তাহলে কয়েকটা ছোট্ট উপায় মেনে চললেই ঘুমের সমস্যা কেটে যাবে।

ঘুমের সময়টায় টিভি চালিয়ে রাখবেন না। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার এক ঘণ্টা আগে ল্যাপটপ, মোবাইলের মতো যন্ত্রের ব্যবহার বন্ধ করে দিন। রাত জেগে সামাজিক ট্যাব, ল্যাপটপ, ডেস্কটপ, মোবাইলে সময় কাটালে তা শরীরের ওপর প্রভাব ফেলে এবং ঘুম নষ্টের কারণ হতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ঘুমানোর সময়ে দুটো পায়ের মাঝখানে একটা বালিশ রেখে শুলে ভালো ঘুম হয়।

ঘুমের সময় সঠিকভাবে শোওয়া জরুরি। বালিশের মাঝামাঝি জায়গায় মাথা রাখুন।

কাজের মাঝখানে ঘুম পেলেও ঘুমোবেন না। প্রয়োজনে সেই সময়টা কারও সঙ্গে কথা বলে ঘুম কাটিয়ে নিন। তবেই রাতে ভালো ঘুম হবে।

যদি কোনও নির্দিষ্ট সময়ে ওঠার তাড়া না থাকে, তাহলে অ্যালার্ম ঘড়িটাকে ড্রয়ারের মধ্যে বা অন্য কোথাও সরিয়ে রাখুন।

একটা নির্দিষ্ট সময়ে ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস করুন। যাতে অ্যালার্ম ঘড়ির দরকার না পড়ে।

সারাদিনে যে কোনও সময়ে কিছুটা নিয়ম করে শরীরচর্চা করলে ভালো ঘুম হয়।

রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমাতে চাইলে তুলনামূলক ঠান্ডা স্থান নির্বাচন করুন। ঘরে পর্যাপ্ত পরিমাণ বাতাস প্রবেশ না করলে সেখানে ঘুমের সমস্যা হওয়াটা স্বাভাবিক বিষয়। ঘুমানোর জন্য ঠান্ডা ঘর এবং শোবার জায়গা ঠান্ডা নির্বাচন করার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।

খালি পেটে কখনো শুতে যাবেন না। আবার রাতে গুরুপাকও খাবেন না। ভরা পেটে শুতে যাওয়া ঠিক নয়। ঘুমাতে যাওয়ার বেশ কিছু আগেই রাতের খাবার খেয়ে নিন। ঘুমানোর আগে এক গ্লাস দুধ খেতে পারেন। দুধে থাকে ট্রিপটোফ্যান যা আপনাকে ঘুমাতে সাহায্য করবে। দুধ খুব বেশি গরম না হওয়া ভালো।

রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে সিগারেট, তামাক, চা, কফি না খাওয়াই ভালো। ঘুমের ওষুধ খাবেন না। ঘুম না হলে চিকিত্সকের পরামর্শ নিন।

Leave a Reply

Translate »