আইকোনিক ফোকাস ডেস্কঃ বছরজুড়ে খেলা নিয়ে ব্যস্ত থাকায় পরিবারকে তেমন সময় দিতে পারি না। তাই মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই পুরো পরিবার নিয়ে ইয়র্কশায়ারে তিন দিনের ছুটিতে গিয়েছিলাম। সেখানে মা-বাবার সঙ্গে খুব ভালো সময় কাটিয়েছি। ডেনমার্কের বিপক্ষে সেমিফাইনাল ম্যাচটি সেখানকার মিডলহাম হাউসে বসেই দেখা। উপভোগ্য এক ম্যাচ জিতে ফাইনালে উঠেছি আমরা। এটি আমাদের জন্য বিশাল ও অভূতপূর্ব এক অর্জন। এই টুর্নামেন্টে এখন ইংল্যান্ড দলের সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িয়ে পড়েছে পুরো দেশের মানুষ। সবার চোখ এখন ইউরোর ফাইনালে। আমরা মনেপ্রাণে ট্রফিটা চাই।
ইউরো শুরু হওয়ার আগে কেউ ইংল্যান্ডকে শিরোপার দাবিদার ভাবেনি। সেই দলটিই এখন পর্যন্ত টুর্নামেন্টে অপরাজিত থেকে ফাইনালে। তা–ও আবার নকআউট পর্বের শুরুতে জার্মানিকে বিদায় করে দিয়ে। এরপর ফাইনালে ওঠার কাজটি করেছে এবারের ইউরোর অন্যতম আকর্ষণীয় দল ডেনমার্ককে হারিয়ে। একটি দল হিসেবে নিজেদের প্রমাণ করে সেমিফাইনালে এসেছিল ডেনিশরা। সেমিফাইনালে তাদের হারানোর কাজটি সহজ ছিল না।
ডেনমার্কের অন্যতম শক্তির জায়গা গোলরক্ষক কাসপার স্মাইকেল। ক্লাব ফুটবলে লেস্টার সিটিতে আমরা সতীর্থ। এই টুর্নামেন্টে সে আমাকে দারুণভাবে মুগ্ধ করেছে। অবশ্য তার দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে অবাক হওয়ার কিছু নেই। তার কাছে এমন পারফরম্যান্স প্রত্যাশিত ছিল। ক্লাবের প্রতি অনুশীলনেই দেখেছি, সে নিজেকে বিশ্বমানের গোলরক্ষকের পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে।
ইউরোতে ইংল্যান্ড দল নিয়ে কথা বলতে হলে রাহিম স্টার্লিংয়ের কথা আলাদা করে বলতে হয়। আমি মনে করি, এখন পর্যন্ত দলের সেরা খেলোয়াড় সে। ইংল্যান্ডের হয়ে বড় কোনো টুর্নামেন্টে খেলতে গেলে যে চাপ নিতে হয়, সেটি জয় করে দলের প্রয়োজনে সঠিক সময়ে গোল করছে স্টার্লিং। তার ওপর এখন পুরো জাতির অনেক প্রত্যাশা। ফাইনালেও তাকে এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে।
নিজের দেশের স্টার্লিং ছাড়াও আরও অন্য দেশের কয়েকজন ফুটবলারের খেলায় আমি মুগ্ধ। ইতালির স্পিনাৎসোলা, পর্তুগালের রেনাতো সানচেজ, ওয়েলসের ড্যানি ওয়ার্ড ও আরও কয়েকজনের নাম আসবে। তবে স্টার্লিংই এই টুর্নামেন্টে সবচেয়ে ধারাবাহিক, প্রয়োজনের সময়ে ইংল্যান্ড দলের বড় ত্রাণকর্তা।
প্রথমবারের মতো ইউরোর ফাইনাল খেলতে যাচ্ছে ইংল্যান্ড। ইতালির বিপক্ষে খুব কঠিন ও জমজমাট একটি ম্যাচ অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য। সব বিভাগ মিলিয়ে ইতালি খুবই শক্তিশালী একটি দল, খুবই সংগঠিত। এই দলের শিরোপা জেতার সব রকম সামর্থ্য আছে। ফাইনাল তাই হতে যাচ্ছে দারুণ উপভোগ্য।
ইতালি দলটা যেমন মানচিনির হাতে পড়ে বদলে গিয়েছে, ইংল্যান্ড দলটাকেও ঠিক রাস্তায় রেখেছেন গ্যারেথ সাউথগেট। ইংল্যান্ডের এই সাফল্যের পেছনে কোচ সাউথগেটের পরিকল্পনাকে সামনে রাখতে হবে। তারুণ্যময় একটি দলকে তিনি খুব ভালো সামলাচ্ছেন। দলের মধ্যে তিনি এমন একটি পরিবেশ তৈরি করেছেন যে খেলোয়াড়েরা তাদের সেরাটা দিতে পারছে। পুরো দলটাকে এক সুতোয় বাঁধার জন্য সাউথগেটকে কৃতিত্ব দিতেই হবে।