অভিনয় নৈপুণ্যে মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছিলেন প্রয়াত অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদি। মেধা মনন ও বুদ্ধির মিশ্রণে তার অভিনয়ে ছিল স্বতন্ত্রতা। মঞ্চ থেকে টিভি। টিভি থেকে বড় পর্দা। কোথায় তার স্পর্শ নেই। যেখানেই পা রেখেছেন সেখানেই তিনি মুঠো মুঠো মুক্তা ছড়িয়েছেন। যার কারণে আজও তিনি ঔজ্জ্বল।
বাংলাদেশের অভিনয়-জগতের উজ্জ্বলতম শিল্পী ছিলেন হুমায়ুন ফরীদি। নিজস্ব অভিনয়ের জৌলুসে ছিলেন অপ্রতিদ্বন্দ্বী। আজ তার ৬৮তম জন্মবার্ষিকী। ১৯৫২ সালের এই দিনে ঢাকার নারিন্দায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ১৯৭০ সালে স্নাতক শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জৈব রসায়ন বিভাগে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে স্থগিত হয়ে যায় পড়াশোনা। স্বাধীনতার পর অর্থনীতি বিষয়ে ভর্তি হন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। মেধার স্বাক্ষর রাখেন প্রাতিষ্ঠানিক ফলাফলে। প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করে স্নাতক সম্মান পরীক্ষা পাস করেন। এমন ফল নিয়ে যে কেউ বেছে নিতে পারেন নিশ্চিত জীবনের পেশা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা। কিন্তু তিনি বেছে নিয়েছিলেন অভিনয়কে। ২০১২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের এই শক্তিমান অভিনেতা মৃত্যুবরণ করেন। তার শূন্যতা অপূরণীয়।
বাংলাদেশের টেলিভিশন ও চলচ্চিত্র দর্শকেরা হুমায়ুন ফরীদিকে বেশি চেনেন খলচরিত্রের একজন অসাধারণ অভিনেতা হিসেবে। তবে যেকোনো চরিত্রেই ছিলেন সপ্রতিভ। স্বাধীনতা-উত্তরকালে বাঙালির নিজস্ব অভিনয় আঙ্গিক নির্মাণে সেলিম আল দীন, নাসির উদ্দীন ইউসুফদের মতো নাট্যকার-পরিচালকদের পাশাপাশি তিনিও সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন গ্রাম থিয়েটার আন্দোলনের সঙ্গে। সপ্রতিভ অভিনয়ের জন্য খ্যাতি রয়েছে মঞ্চনাটকে, দিয়েছেন নির্দেশনাও।
আশির দশক থেকে শুরু করে আমৃত্যু অভিনয় করেছেন টেলিভিশনের অনেক নাটকে। অভিনয়ই ছিল তার ধ্যানজ্ঞান। ছাত্রজীবনে যুক্ত হন ঢাকা থিয়েটারে। অভিনয়ের নেশা ছিল বাচিক শিল্পের আরেক মাধ্যম আবৃত্তিতেও। জন্মদিনে তার প্রতি আমাদের সময়ের বিনম্র শ্রদ্ধা।