চলে গেলেন বাংলা চলচ্চিত্র জগতের বিশিষ্ট অভিনেতা সন্তু মুখোপাধ্যায়।বাংলা চলচ্চিত্র জগতে এ যেন এক নক্ষত্রপতন। বেশ কিছুদিন ধরে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। হাইপারটেনশন ও সুগারের কারণে গত মাসে বেশ কিছুদিন তিনি ভর্তি ছিলেন হাসপাতালে। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর।
বুধবার সন্ধ্যায় দক্ষিণ কলকাতার নিজ বাড়িতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
সন্তু মুখোপাধ্যায় বাংলা চলচ্চিত্রের অন্যতম প্রতিষ্ঠিত মুখ। ইদানীংকালে বড়ো পর্দার পাশাপাশি দাপটের সঙ্গে অভিনয় করছিলেন ছোটো পর্দাতেও।
তিনি রেখে গেলেন স্ত্রী এবং দুই মেয়ে অভিনেত্রী–স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় ও কস্টিউম ডিজাইনার অজোপা মুখার্জি এবং অসংখ্য গুণগগ্রাহীদের। তার ছোটভাই সুমন্ত মুখার্জিও বাংলা চলচ্চিত্র জগতের একজন বিশিষ্ট ও শক্তিশালী অভিনেতা।
১৯৫১ সালের ১৭ জানুয়ারি কলকাতায় জন্ম সন্তুর। পড়াশোনার পাঠ শেষ করে ১৯৭৫ সালে পরিচালক তরুণ মজুমদারের “সংসার সীমান্তে” সিনেমা দিয়ে চলচ্চিত্র জগতে আত্মপ্রকাশ ঘটে তার। ওই বছরেই তপন সেনার “রাজা” ছবিতেও অভিনয় করেন তিনি।
এছাড়াও ভালোবাসা ভালোবাসা, সংসার সীমান্তে, গণদেবতা, ব্যাপিকা বিদায়, হারমোনিয়াম, দেবদাস, হেমন্তের পাখি, দাদা মনি, বৈকুন্ঠের উইল, বিদ্রোহী, ব্রেক ফেল’সহ একাধিক ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি।
সাফল্যের সঙ্গে তপন সিনহা, তরুণ মজুমদার, গৌতম ঘোষ, হরনাথ চক্রবর্তী, সলিল সেন, সুখেন দাসের মতো বহু পরিচালকের সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি।
উত্তম কুমার, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, মাধবী মুখোপাধ্যায়ের মতো অভিনেতা-অভিনেত্রীদের সঙ্গে কাজ করেছেন সন্তু। বড় পর্দার পাশাপাশি ছোট পর্দায়ও অত্যন্ত জনপ্রিয় ও অপরিচিত মুখ হলেন সন্তু মুখোপাধ্যায়। ইষ্টিকুটুম, জল নুপুর, অন্দরমহলসহ একাধিক টেলি ধারাবাহিকে অভিনয় করেছেন তিনি। অসুস্থ শরীর নিয়েও তিনি অভিনয়ের কাজ করে যাচ্ছিলেন।
তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে চলচ্চিত্র মহলে। সহশিল্পীর প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, মাধবী মুখোপাধ্যায়, পরিচালক কৌশিক গাঙ্গুলী প্রমুখ।
ভারতীয় গণনাট্য সংঘ, পশ্চিমবঙ্গ গণতান্ত্রিক লেখক শিল্পী সংঘ, জনবাদী লেখক সংঘের তরফেও শোকপ্রকাশ করা হয়েছে।
তার মৃত্যুর খবর পেয়ে এদিন রাতে তার বাসায় যান রাজ্যের যুব কল্যাণ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। বৃহস্পতিবার সকালে দক্ষিণ কলকাতার কেওড়াতলার মহাশ্মশানে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।