করোনাকালে যখন সবকিছু স্থবির, এরমধ্যেই কিনা ভেঙে গেল অভিনেতা জিয়াউল ফারুক অপূর্ব ও নাজিয়া হাসান অদিতির সংসার। রোববার (১৭ মে) বিকেলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দীর্ঘ ৯ বছরের সংসার ভেঙে যাওয়ার খবর নিশ্চিত করেছেন নাজিয়া।
ভেঙে গেছে ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা জিয়াউল ফারুক অপূর্বর সংসার। স্ত্রী নাজিয়া হাসান অদিতির সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় বিয়ের ৯ বছরের মাথায় তাদের দাম্পত্যজীবনের বিচ্ছেদ ঘটে।
রবিবার (১৭ মে) বিকেলে সংসার ভাঙার খবর চ্যানেল আই অনলাইনকে নিশ্চিত করেছেন নাজিয়া হাসান অদিতি। ডিভোর্স বিষয়ে বিস্তারিত মুখ না খুললেও মুঠোফোনে অদিতি জানান, ‘অপূর্বর সঙ্গে ডিভোর্স হয়েছে, এটা সত্য।’
তবে কী কারণে ডিভোর্স হলো, কবে ডিভোর্স হলো তা নিয়ে কিছুই বলতে রাজি হননি নাজিয়া হাসান অদিতি। তার ভাষ্য ছিল এমন, ‘অপূর্বর সঙ্গে ডিভোর্স হয়েছে মানুষের এটা জানা দরকার। জানালাম। এর বেশি কিছুই বলতে চাইনা। ব্যক্তিগত বিষয় ব্যক্তিগতই থাকুক।’
অপূর্ব-অদিতির দাম্পত্যজীবনে আয়াশ নামে এক পুত্র সন্তান রয়েছে। সন্তান কার কাছে জানতে চাইলেও অদিতি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, আর কিছু জানাতে চাইছি না।
তবে তাদের একটি ঘনিষ্ঠসূত্র জানিয়েছে, চলতি বছরের প্রথমদিকে নাজিয়ার সঙ্গে অপূর্বর বিচ্ছেদ ঘটে।
এদিকে নাজিয়া হাসান অদিতি তার নিজস্ব ফেসবুকেও বিষয়টি জানান দিয়েছেন। রিলেশনশিপ স্ট্যাটাসেও দেখা গেছে তিনি ‘ডিভোর্সড’ উল্লেখ করেছেন। এমনকি একটি স্ট্যাটাসে সবার উদ্দেশে তিনি লিখেন, ‘‘আমাকে ‘ভাবী’ ডাকা বন্ধ করুন সবাই!’’
এদিকে রোববার দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে অপূর্ব লেখেন, আমাদের যাত্রাটি ছিল দুর্দান্ত। আমরা নয় বছর একে অপরের সবকিছু ভাগ করে নিয়েছি। বিচ্ছেদটা আমাকে কিছুটা হতবাক করে দিয়েছে। যদিও আমরা নিজের জন্য চেয়েছিলাম। তবে দুঃখের বিষয় এখানেই আজ আমাদের জীবন এনে দিয়েছে। এত বছর যাবত আমরা এক সাথে ছিলাম, সে সর্বদায় এই বছরগুলো আমার দুর্দান্ত অংশীদার এবং সত্যিকারের শুভাকাঙ্ক্ষী ছিলো। আমার অনেক সাফল্যের পেছনে মূল ভূমিকা পালন করেছে। সে সত্যিই একজন আশ্চর্য ব্যক্তি, একজন আত্মবিশ্বাসী উদ্যোক্তা এবং সর্বোপরি অত্যন্ত দয়ালু এবং মানবিক ব্যক্তি।
সন্তান প্রসঙ্গে অপূর্ব লেখেন, আমার ক্যারিয়ারের অনেক অর্জন। তবুও আমার সর্বকালের সবচেয়ে বড় অর্জন সর্বদা থাকবে- আমাদের ছেলে আয়াশ। পিতৃত্বের এই দুর্দান্ত উপহারের জন্য আমি নাজিয়াকে পর্যাপ্ত পরিমাণে ধন্যবাদ জানাতে পারব না। তিনি আমার সন্তানের অনুকরণীয় মা হয়েছেন এবং আমাদের ছেলের প্রতিপালনের অংশীদার হিসাবে আমাদের যাত্রা সর্বদা অব্যাহত থাকবে।
সহকর্মী ভক্তদের উদ্দেশে তিনি লেখেন, বিয়ের মতো বিষয়টি ভয়ঙ্কর, বিয়ে ভেঙে যাওয়ায় অনেক প্রশ্ন। সবাইকে অনুরোধ করব আমাদের জন্য আপনারা দোয়া করবেন, আমি এবং নাজিয়া যেন কঠিন সময়গুলো পার করতে পারি। দয়া করে আমাদের তিনজনকেই আপনারা দোয়া করবেন। আপনাকে সকলকে ধন্যবাদ এবং আল্লাহ আমাদের সকলকে মঙ্গল করুন।
পরে দেয়া আরেকটি স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ব্যাক্তিগত জীবন নিয়ে গসিপ করা এবং তীর্যক, মিথ্যা বানোয়াট মন্তব্য করে তাদের কষ্ট বাড়িয়ে দেওয়ার মতো খারাপ কাজগুলো থেকে সবাই বিরত থাকবেন এবং এর মধ্যে রসালো কোন গল্প তৈরী করে সংবাদ করার চেষ্টা করবেন না, প্লিজ। অত্যন্ত সম্মানের সাথে জানাচ্ছি আমি এবং আমার স্ত্রী অদিতি অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ সমাধানের মধ্যদিয়ে আমাদের সম্পর্কের আইনগত ভাবে ইতি টেনেছি।
কেউ ভুল সংবাদ প্রচার করলে ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি তার। লিখেছেন, কোন সংবাদ মাধ্যম এই ব্যাপারটাতে তৃতীয় কাউকে জড়িয়ে কোন ধরনের ভুল সংবাদ প্রকাশ করলে আমি তাদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আইনগত ব্যবস্থা নিব। অলরেডি প্রকাশিত কিছু সংবাদের লিংক আমি সংগ্রহ করেছি। এখানে আরো উল্লেখ্য আমি অদিতিকে সম্মান করি এবং আজীবন করবো। সুতরাং কোনভাবেই অদিতিকে অসম্মান করে তার পাশে অন্য কারো নাম আমি সহ্য করবো না। ভুলে যাবেন না অদিতি এখন আইনগতভাবে আমার স্ত্রী না থাকলেও সে আমার সন্তানের মা।
এরআগে ২০১০ সালের ১৯ আগস্ট অভিনেত্রী সাদিয়া জাহান প্রভাকে বিয়ে করেছিলেন অপূর্ব। যদিও এর পরের বছরের ফেব্রুয়ারিতেই ডিভোর্স হয়ে যায় তাদের। ওই বছরের ১৪ জুলাই অপূর্ব পারিবারিকভাবে নাজিয়া হাসান অদিতিকে বিয়ে করেন।